ডালিম শেখ।ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা ডালিম শেখ খুনে কয়েক দিন আগেই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে দু’জনকে পাকড়াও করেছিল সিআইডি। মঙ্গলবার ও বুধবার, পরপর দু’দিনে ফের আরও দু’জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। এখনও পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে মোট ১৫ জনকে ধরা হল।
সিআইডি-র দাবি, ধৃতদের জেরা করেই হাসান মোল্লা ও সুজাই শেখ নামে দু’জনের নাম সামনে আসে। তদন্তকারীদের দাবি, হত্যাকাণ্ডের দু-তিনি দিন পরে পূর্বস্থলীর খড়দত্তপাড়ার বাসিন্দা হাসান কেরলের মালাপ্পুরম জেলার মাঙ্গাপুরমে রাজমিস্ত্রির কাজ জোগাড় করে চলে যান। সেখানেই মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় বাজারের মধ্যে একটি নির্মীয়মাণ ঘরের এক তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিল হাসান। সেই সময়েই তাকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতকে কেরলের আদালতে হাজির করানো হলে চার দিনের ‘ট্রানজিট রিমান্ড’ দেওয়া হয়। সিআইডি-র দাবি, ধৃত হাসান জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন। সাদ্দাম ও ফারুখকে জেরা করে খুনের সময়ে ব্যবহৃত চার চাকার গাড়িটির সন্ধান মিলেছে বলে জানান তদন্তকারীরা।
কী ভাবে সন্ধান মিলল হাসানের? সিআইডি জানায়, ধৃতদের জেরা করে এবং খড়দত্তপাড়া থেকে মোট ১৬টি ফোন নম্বর পায় সিআইডি। সেগুলির মধ্যে অধিকাংশ নম্বরেরই ‘লোকেশন’ দেখাচ্ছিল, মাঙ্গাপ্পুরম এলাকা। হাসানের নম্বরটি বন্ধ ছিল। তবে তাঁর মোবাইলের ‘আইএমইআই’ নম্বরের সূত্র ধরে কিছু দিন আগেই কেরলের ওই এলাকায় পৌঁছে যায় সিআইডি-র বর্ধমান শাখার তিন জনের একটি দল।
পূর্বস্থলী থানার পুলিশের দাবি, জেলার মন্তেশ্বর, পূর্বস্থলী, কাটোয়া, মঙ্গলকোট, ভাতার, গলসি-সহ বেশ কিছু এলাকায় এর আগেও খুনের চেষ্টা, বোমা বাঁধা-সহ নানা অসমাজিক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে হাসানের নামে। শুধু তাই নয়, বছর দুয়েক মন্তেশ্বরের তেঁতুলিয়ায় দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ছ’জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাতেও নাম জড়ায় হাসানের। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ডালিম শেখকে খুনে ব্যবহৃত বন্দুকগুলি মন্তেশ্বরেরই এক ব্যক্তি সরবরাহ করেছিলেন।
এই গ্রেফতারির পরে ফের বুধবার সিআইডি-র জালে ধরা প়়ড়ে মন্তেশ্বরের তেঁতুলিয়ার বাসিন্দা সুজাই। তদন্তকারীরা জানান, সুজাই গাজিয়াবাদের মহম্মদপুরে লুকিয়ে ছিলেন। গত রবিবার গাজিয়াবাদ থেকে সাদ্দাম শেখ ও ফারুক শেখ নামে দু’জনের ধরা পড়ার খবর পেয়ে এলাকা ছাড়েন সুজাই। এর পরেই সিআইডি বর্ধমান স্টেশন লাগোয়া এলাকা ও নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে নজর রাখতে শুরু করে। সিআইডি জানায়, এ দিন দুপুরে ট্রেন থেকে তেতুঁলিয়ার বাস ধরার জন্য কাটোয়া ওভারব্রিজে উঠছিলেন সুজাই। সেই সময়েই তাকে ধরা হয়।
তবে এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত, রহমতুল্লা চৌধুরী (বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ভাই) ও জেলা পরিষদ সদস্য বিকাশ চৌধুরী
এখনও অধরা।