দেড় বছর বাদে ভিন‌্ রাজ্য থেকে উদ্ধার ৪

প্রায় দেড় বছর ধরে তামিলনাড়ুর ত্রিপুর জেলার একটি খামারবাড়ি আটকে থাকা তিন মহিলা-সহ চার জনকে উদ্ধার করল বর্ধমান জেলা পুলিশ। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে শনিবার বর্ধমানে নিয়ে আসা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৬
Share:

প্রায় দেড় বছর ধরে তামিলনাড়ুর ত্রিপুর জেলার একটি খামারবাড়ি আটকে থাকা তিন মহিলা-সহ চার জনকে উদ্ধার করল বর্ধমান জেলা পুলিশ। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে শনিবার বর্ধমানে নিয়ে আসা হয়।

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর মার্চ মাসে আউশগ্রামের কুরুম্বা গ্রামের এক মহিলার মাধ্যমে হাট মাধবপুরের ১৫ জন তামিলনাড়ুতে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ত্রিপুর জেলার মেলানি থানা এলাকার নাতাপল্লির ওই খামারবাড়িতে কাজও মেলে। কিন্তু সেখানে বেতন তো দূরহস্ত, ঠিক মতো খেতেও দেওয়া হতো না বলে অভিযোগ। কোনও ক্রমে ওই পনেরো জনের মধ্যে ১১ জন রাতের অন্ধকারে পালিয়ে আসেন। গত ২০ জুলাই নীলমণি হাঁসদা স্থানীয় ছোঁড়া ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন, তামিলনাড়ুর এরর স্টেশনের কাছে একটি খামার বাড়িতে তাঁদের পরিচিতদের কাজ দেওয়ার নাম করে চার জনকে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে তাঁদের মারধরও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, পালিয়ে আসা ১১ জন অবশ্য খামারবাড়ির নির্দিষ্ট ঠিকানার হদিস দিতে পারেননি।

তা হলে কী ভাবে হদিস মিলল? জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৩ তারিখে আউশগ্রাম থানার ছোঁড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ সুজিত ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল তামিলনাড়ুর এরর স্টেশনের উদ্দেশে রওনা হয়। ওই দলে ছিলেন খামারবাড়ি থেকে পালিয়ে আসা এক যুবকও। গত ৫ সেপ্টেম্বর এররে পৌঁছয় দলটি। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “পুলিশের বিশেষ দলটি সেখানে গিয়ে দু’দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে খামারবাড়িটির সন্ধান পায়। পরে ওই চার জনকে উদ্ধার করা হয়।’’ উদ্ধার ওই চার জনের নাম শর্মিলা সোরেন, সুমিতা সোরেন, কিষাণ মান্ডি ও মালতী সোরেন। বৃহস্পতিবার মোলানি থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই খামার বাড়িতে হানা দিয়ে মোহনলাল যাদব নামে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়। ওই দিনই তামিলনাড়ুর স্থানীয় আদালতে অভিযুক্তের ‘ট্রানজিট রিমান্ড’ চেয়ে আবেদন করে বর্ধমান জেলা পুলিশের বিশেষ দলটি। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করেন।

Advertisement

উদ্ধার হওয়া শর্মিলাদেবীর অভিযোগ, ‘‘ওখানে বিহারের এক যুবকের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়।” সুমিতাদেবীর অভিযোগ, “১১জন রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায় বলে সন্ধ্যে নামলেই খামারবাড়ির একটি ঘরে তালাবন্ধ করে রাখা হতো।” শুধু তাই নয়, একটু বেশি খাবার চাইলে পাইপ দিয়ে মারধর করা হতো বলেও অভিযোগ। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে মোহনলাল। ধৃতের কোনও সঙ্গী রয়েছে কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন