প্রতিযোগিতায় উদ্ধারকারীরা

সোমবার থেকে ইসিএলের ধেমোমেন ভূগর্ভস্থ খনিতে শুরু হয়েছে ৪৯তম সর্বভারতীয় খনি দুর্ঘটনা উদ্ধার প্রতিযোগিতা। তাতে দেশের ২৩টি সরকারি ও বেসরকারি খনি সংস্থা যোগ দিয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটির (ডিজিএমএস) উদ্যোগে চলছে এই প্রতিযোগিতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
Share:

মঙ্গলবার ধেমোমেনে। নিজস্ব চিত্র

ভূগর্ভস্থ খনিতে দুর্ঘটনার খবর মেলা মাত্রই অন্ধকার সুড়ঙ্গ বেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন উদ্ধারকারীরা। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে পাঁচ কিলোমিটার পাতাল-পথ পেরিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত জখম খনিকর্মীকে মাটির উপরে নিয়ে এসে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হল হাসপাতালে।— খনি এলাকায় এ ছবি চেনা। কিন্তু মঙ্গলবারের এই দৃশ্যটা একটি অল ইন্ডিয়া মাইনস রেসকিউ অপারেশন প্রতিযোগিতার।

Advertisement

সোমবার থেকে ইসিএলের ধেমোমেন ভূগর্ভস্থ খনিতে শুরু হয়েছে ৪৯তম সর্বভারতীয় খনি দুর্ঘটনা উদ্ধার প্রতিযোগিতা। তাতে দেশের ২৩টি সরকারি ও বেসরকারি খনি সংস্থা যোগ দিয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটির (ডিজিএমএস) উদ্যোগে চলছে এই প্রতিযোগিতা। ডিজিএমএসের ডিরেক্টর আরটি মাণ্ডেকার বলেন, ‘‘ফি বছরই এই প্রতিযোগিতা হয়। এ বার ইসিএল এলাকায় তা আয়োজিত হয়েছে।’’ তিনি জানান, খনিতে দুর্ঘটনা হলে কর্মরত কর্মী, আধিকারিকদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য প্রতিটি খনি সংস্থায় প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল থাকে। তাৎক্ষণিক ভাবে সেই দলের সদস্যরা উদ্ধারকাজে কতটা কর্মক্ষম ও তৎপর, তা দেখতেই এমন প্রতিযোগিতা।

ইসিএলের মাইনস রেসকিউ দলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অপূর্ব ঠাকুর এ দিন জানান, সাধারণত, খনি দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র সদস্যেরা যে যেমন অবস্থায় রয়েছেন, সেই অবস্থাতেই দেড় মিনিটের মধ্যে বিশেষ গাড়িতে দুর্ঘটনাস্থলে রওনা দেন। তাই কাজে যোগ দিয়ে প্রত্যেকেই নিজেদের উদ্ধারকারী ‘কিট’ তৈরি রাখেন। কার্যালয়ের গেটের সামনে গাড়িও দাঁড় করানো থাকে। সাধারণত, খনি দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে একসঙ্গে দু’টি দলকে কাজে নামানো হয়। প্রতিটি দলে ছ’জন করে সদস্য থাকেন। প্রয়োজনে সেই সংখ্যা বাড়ানো হয়। কাজে নামার আগে খনি আধিকারিকদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া হয় কী ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। খনিতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি ধস-কবলিত এলাকাতেও তাঁরা কাজ করেন বলে জানা অপূর্ববাবু।

Advertisement

কিন্তু জেলার খনি এলাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনার খবর সামনে আসে। খনির সুরক্ষা নিয়ে প্রায়ই নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগও করে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলি। এমন প্রতিযোগিতা অবশ্য সেই খনি-নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করার জন্যই, দাবি খনিকর্তাদের। মঙ্গলবার উদ্ধারকারী দলের কাজ দেখার সময় স্থানীয় খনিকর্মী চণ্ডী বসু বলেন, ‘‘উদ্ধারকারীদের ভরসাতেই তো আমরা নির্ভয়ে খনিগর্ভে কাজে নামার সাহস পাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন