৭৫-এ পা স্কুলের, তবু মেঝেতেই ক্লাস

স্কুলের বয়স পঁচাত্তর। তার পরেও শীতে ঠান্ডা মেঝেতেই গুঁতোগুঁতি করে ক্লাস করতে হয় পড়ুয়াদের। ঘরও প্রয়োজনের তুলনায় কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাতার শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০২
Share:

ভাতারের স্কুলে চলছে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের বয়স পঁচাত্তর। তার পরেও শীতে ঠান্ডা মেঝেতেই গুঁতোগুঁতি করে ক্লাস করতে হয় পড়ুয়াদের। ঘরও প্রয়োজনের তুলনায় কম।

Advertisement

মঙ্গলবার স্কুলের ৭৫ বছরের অনুষ্ঠানের শেষে সমস্যাগুলি তুলে ধরেন ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের বড়কালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক, শিক্ষকেরা। স্থানীয় বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল বিধায়ক তহবিল থেকে একটি বড় ঘর তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

স্কুলের বর্তমান পড়ুয়া ২৯৩ জন। ঘর রয়েছে ৬টি। বাধ্য হয়ে এক একটি ঘরে ৭৫ জন পড়ুয়াকে নিয়ে ক্লাস করাতে হয় শিক্ষকদের। পড়ুয়ারা ঠিক করে বসতে পারে না, ঠিকমতো পড়াতে পারেন না শিক্ষকেরাও। রয়েছে বেঞ্চের সমস্যাও। শিক্ষকেরা জানান, ন্যূনতম ৬০টি বেঞ্চের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু রয়েছে ২৫টি বেঞ্চ। ফলে বেশির ভাগ পড়ুয়ারই ঠাঁই হয় ঠান্ডা মেঝেয়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির খুদেদের মাটিতে বসতে হয়। অর্ক ধারা, সায়ন কুন্ডু, আনিশা সামন্তরা বইয়ের ব্যাগের সঙ্গে বাড়ি থেকে বয়ে নিয়ে আসে আসনও। প্রধান শিক্ষক সমীরণ মণ্ডল বলেন, “বছর খানেক আগে বেঞ্চ তৈরির জন্য ৬০ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সেই টাকাতে ২৫টি বেঞ্চ করা হয়। বাকি বেঞ্চের জন্যে দফতরকে বলা হয়েছে।’’ প্রাথমিক শিক্ষক সংসদ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছেন। স্কুলে পানীয় জল থেকে শৌচাগারের সমস্যাও রয়েছে।

Advertisement

১৯৩১ সালে একটি বৈঠকখানার ভিতর পাঠশালা তৈরি করেন বিরিঞ্চি মাধব ভট্টাচার্য। যিনি গ্রামে ‘বড় মাস্টারমশাই’ বলে পরিচিত ছিলেন। ওই পাঠশালা সরকারি অনুমোদন পায় ১৯৪৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। বিরিঞ্চিবাবুই হন প্রধান শিক্ষক। গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দান করা বর্তমান জায়গায় ১৯৫৭ সালে স্কুলটি উঠে আসে। টিনের চাল আর ৫টি মাটির ঘরে স্কুল শুরু হয়। সেই সময়কার ছাত্র বিশ্বনাথ মণ্ডল, তাপস সরকারদের দাবি, “অন্য গ্রাম থেকেও আমাদের স্কুলে পড়তে আসত। সেই সময় প্রায় ৪০০ জন পড়ুয়া ছিল স্কুলে।’’ বর্তমানে বড়বেলুন গ্রামে তিনটে প্রাথমিক স্কুলের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে।

এর মধ্যেও গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় তিন দিন ধরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করা হয় স্কুলে। শেষ দিন ছিল ভাত, মাংস, মিষ্টির পংক্তিভোজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন