নাবালিকার রক্তাক্ত দেহ, প্রশ্নে নিরাপত্তা

পুলিশ জানায়, ওই বালিকা গত আড়াই মাস ধরে জাহাঙ্গিরি মহল্লায় দাদু, দিদিমার সঙ্গে থাকত। তার আসল বাড়ি বিহারের লক্ষ্মীসরাইতে। রেলপাড় এলাকার এক মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল ওই বালিকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

আসানসোলের রেলপাড়া এলাকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

জেলায় এক প্রান্তে জনসভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য প্রান্তে প্রশাসনিক বৈঠক করছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এই পরিস্থিতিতে সোমবার ন’বছরের এক বালিকার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমানে। সোমবার সকালে আসানসোল রেল ইয়ার্ড লাগোয়া ঝোপজঙ্গল থেকে দেহটি উদ্ধার হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই বালিকার নিখোঁজ ডায়েরি করতে থানায় যাওয়া হলেও পুলিশ ফিরিয়ে দেয়।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই বালিকা গত আড়াই মাস ধরে জাহাঙ্গিরি মহল্লায় দাদু, দিদিমার সঙ্গে থাকত। তার আসল বাড়ি বিহারের লক্ষ্মীসরাইতে। রেলপাড় এলাকার এক মাদ্রাসার ছাত্রী ছিল ওই বালিকা। তার দাদু পুলিশকে জানান, গত শনিবার দুপুরে নাতনি মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরে বই খাতা রেখে খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলেতে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু তার পরে আর বাড়ি ফেরেনি ওই বালিকা। পরিবারের লোক জন জানান, শনিবার রাতভর এলাকাবাসীর সঙ্গে তাঁরা নানা এলাকায় খোঁজখবর করেন ওই বালিকার। কিন্তু কোনও খবর না মেলায় রবিবার সকালে ওই বালিকার দাদু আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু তিনি বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ না নিয়ে পুলিশ বলে আরও খুঁজে দেখুন।’’

সোমবার সকালে এলাকার বাসিন্দারা রেল ইয়ার্ড লাগোয়া ঝোপে ঘেরা একটি জায়গায় দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। এর পরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ওই বালিকার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি শনাক্ত করেন। এলাকাবাসী এবং মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বালিকার দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, ওই বালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। পুলিশকে সামনে পেয়ে নিখোঁজ ডায়েরি না নেওয়া ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। পুলিশকে দেখে শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভের মাঝেই দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পুলিশ আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায়।

এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর গুলাম সরওয়ারও পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘‘দিনভর এই এলাকায় মদ, জুয়া, হেরোইনের আসর বসছে। ভিড় জমাচ্ছে, অপরিচিত এবং বহিরাগতরা। বারবার আর্জি সত্ত্বেও পুলিশ সক্রিয় হচ্ছে না।’’‌ যদিও পুলিশ ডায়েরি না নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সির দাবি, ‘‘মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে। তবে ধর্ষণ হয়েছে কি না, তা ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে। নিখোঁজ ডায়েরি না নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’ এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন