বাস ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র।
দুর্ঘটনা এড়াতে রাস্তায় বসেছে স্পিড ব্রেকার। রাস্তার মোড়ে-মোড়ে টাঙানো হয়েছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ লেখা বড়-বড় হোর্ডিং। হেলমেট পরে মোটরবাইকে সওয়ার হওয়ার জন্য সচেতনতা কর্মসূচি চলছে মাঝে-মধ্যেই। তবু লাগাম পড়ছে না দুর্ঘটনায়। বুধবার সকালে কুলটিতে জিটি রোডে মিনিবাসের ধাক্কায় মৃত্যু হল মোটরবাইক আরোহী কিশোরের। গুরুতর জখম হয়েছে তার দুই সঙ্গী।
কুলটির লছিপুর লাগোয়া এলাকায় এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। একটি মোটরবাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিল তিন কিশোর। পুলিশ জানায়, কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। আসানসোল থেকে বরাকরগামী একটি মিনিবাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল তৌফিক আনসারি (১৫) নামে এক কিশোরের। এর পরেই ক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে ভাঙচুর চালায়। গোলমাল বেধে যায়।
মিনিবাসের চালকেরা কোনও নিয়ম মানেন না অভিযোগ তুলে এ দিন বিক্ষোভ-অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জিটি রোডের একাধিক জায়গায় দফায়-দফায় অবরোধ হয়। অবস্থা সামাল দিতে প্রথমে নিয়ামতপুর ও চৌরঙ্গি ফাঁড়ির পুলিশ পৌঁছয়। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পৌঁছয় কুলটি থানার পুলিশ। জনতা-পুলিশে ধাক্কাধাক্কি হয়। পুলিশের একটি জিপ লক্ষ করে ঢিলও ছোড়া হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে এই বিক্ষোভ চলে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মির হাসিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের জন্য তদ্বির করার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। মিনিবাসটি আটক করে পুলিশ। তবে চালক ও খালাসি পলাতক।
এলাকাবাসীর দাবি, মিনিবাসটি দ্রুত গতিতে ছুটছিল। এ দিন দুর্ঘটনার জন্য শহর জুড়ে বেপড়োয়া মিনিবাস চলাচলকেই দুষেছেন কাউন্সিলর। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মিনিবাস চালকেরা কোনও নিয়ম মানেন না। যাত্রী তুলতে বেপরোয়া গতিতে ছোটে বাস। যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার জন্যও দুর্ঘটনা ঘটছে।’’ দুর্ঘটনার পরে বরাকর, চিনাকুড়ি, ডিসেরগড় ও জিটি রোড হয়ে চিত্তরঞ্জন রুটের মিনিবাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু না হওয়ায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘অশান্তির ভয়ে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বেপরোয়া বাস চলাচলের অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।’’