কুষ্ঠ কলোনিতে হবে ‘আদর্শ গ্রাম’

পুরসভার মধ্যে পড়ে এলাকা। কিন্তু রাস্তাঘাট খন্দে ভরা, ঘুপচি বাড়িগুলি থেকে পলেস্তরা খসেছে। দেখে বোঝা মুশকিল, শহরের মধ্যে পড়ে এই অঞ্চল। দুর্গাপুরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সগড়ভাঙা কুষ্ঠ কলোনির এমন হাল অনেক দিন ধরেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০১:৫০
Share:

অপেক্ষা: ঝকঝকে হবে এই রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

পুরসভার মধ্যে পড়ে এলাকা। কিন্তু রাস্তাঘাট খন্দে ভরা, ঘুপচি বাড়িগুলি থেকে পলেস্তরা খসেছে। দেখে বোঝা মুশকিল, শহরের মধ্যে পড়ে এই অঞ্চল। দুর্গাপুরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সগড়ভাঙা কুষ্ঠ কলোনির এমন হাল অনেক দিন ধরেই। সেই কলোনিকে এ বার ‘আদর্শ গ্রাম’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করল মহকুমা প্রশাসন।

Advertisement

দুর্গাপুর শহর থেকে রেললাইন পেরিয়ে দামোদরের খাল বরাবর কয়েক কিলোমিটার মোরামের রাস্তা পেরিয়ে এই কলোনি। ১৯৮৮ সালে গোপীনাথপুরে সরকারি খাস জমিতে শহরের বিভিন্ন এলাকার কুষ্ঠ রোগীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে পুরসভা। বসে নলকূপ। তৈরি হয় প্রাথমিক স্কুল। ধীরে-ধীরে সেখানে থাকতে শুরু করে ৬০টি পরিবার।

কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংস্কারের অভাবে রাস্তা বেহাল। পথবাতি না থাকায় রাতে যাতায়াতে সমস্যা হয়। রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হলে সমস্যা আরও বাড়ে। নলকূপগুলির অধিকাংশই বিকল। সংস্কারের অভাবে বাড়িঘরের অবস্থাও ভাল নয়। এলাকায় বেড়েছে বেকারত্ব।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ‘আদর্শ গ্রাম’ কী ভাবে হবে? প্রশাসনের দাবি, সম্প্রতি চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ব্লাইন্ড রিলিফ সোসাইটি ও নানা শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা। আয়োজন করা হয় স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা শিবির। প্রশাসনের আশ্বাস, কলোনিতে ঢোকার মুখে প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হবে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কলোনিতে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও পার্ক তৈরির আশ্বাস দিয়েছে বলে পুর প্রশাসন সূত্রে খবর। এ ছাড়াও একটি বেসরকারি সংস্থা এলাকায় দু’টি পুকুর কাটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে প্রশাসনের কর্তারা জানান। সেই কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।

বাসিন্দাদের নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করে হাতের কাজ, কদমা, বড়ি প্রভৃতি তৈরির প্রশিক্ষণ এবং মুড়িভাজার যন্ত্র দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। কলোনির এক জনকে সিএনজি চালিত অটোও কিনে দেওয়া হবে প্রশাসন সূত্রে খবর। শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘আর্থিক স্বনির্ভরতা এবং বাসিন্দাদের মানসিক জোর বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ‘আদর্শ গ্রাম’ হিসেবে এই কলোনিকে গড়ে তোলা হবে।’’

প্রশাসনের এমন উদ্যোগে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। উষা পাত্র, রিতা খিলাড়িরা বলেন, ‘‘পথবাতি বসানোর কাজ চলছে। নানা উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আমরা ভাল ভাবে বাঁচতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন