Coronavirus in West Bengal

ওঁদের নমাজের ব্যবস্থা চট্টোপাধ্যায়দের ছাদে

কালনা শহরের ডাঙাপাড়ায় বহু বছরের বাসিন্দা ওই মুসলিমেরা জানান, অন্য বার এলাকার মসজিদেই নমাজ পড়েন তাঁরা।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৪:২৮
Share:

নমাজের আগে বন্দোবস্তো করে দিচ্ছেন চাঁপাদেবী। নিজস্ব চিত্র

করোনা-সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় মসজিদে পাশাপাশি বসে নমাজ পড়ায় সমস্যা। কিন্তু অনেকের বাড়িতে ঘেরা জায়গায় ছড়িয়েছিটিয়ে বসে নমাজ পড়ার জায়গা নেই। এলাকার ‘মুসলিম দাদা’দের মুশকিল দেখে নিজেদের ঘেরা ছাদে তাঁদের নমাজ পড়ার ব্যবস্থা করে দিলেন কালনার চট্টোপাধ্যায় পরিবার। শুধু ইদের দিন নয়, রমজান মাস জুড়েই চার বেলা তাঁদের ছাদে ‘পাঁচ ওয়ক্ত’-এর নমাজ পড়েছেন জনা দশেক মানুষ। কালনা পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান তথা প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগের কথায়, ‘‘দেশ জোড়া দুর্যোগের পরিস্থিতিতে এ ধরনের কাজ মানুষকে আলো দেখাবে।’’

Advertisement

কালনা শহরের ডাঙাপাড়ায় বহু বছরের বাসিন্দা ওই মুসলিমেরা জানান, অন্য বার এলাকার মসজিদেই নমাজ পড়েন তাঁরা। তবে এ বার সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে মসজিদে এক সঙ্গে প্রার্থনা করার উপায় ছিল না। কিন্তু অনেকের বাড়িতেই উপযুক্ত জায়গা নেই। স্থানীয় সূত্রে সে কথা কানে যেতে এগিয়ে আসে চট্টোপাধ্যায় পরিবার। তাঁদের বাড়ির তিনতলায় শেড দেওয়া ছাদে জনা দশেক মানুষ ছড়িয়ে বসে নমাজ পড়তে পারবেন বলে প্রস্তাব দেন তাঁরা। প্রথমে ইতস্তত করলেও, পরে পরিবারটির আন্তরিকতায় মুগ্ধ হন জামাল শেখ, সাহিল শেখ, তামাল শেখরা। বাড়ির বধূ চাঁপা চট্টোপাধ্যায়ের পেতে দেওয়া কার্পেট, ভেলভেটের চাদরেই প্রতিদিন নমাজ পড়তে শুরু করেন তাঁরা।

চাঁপাদেবী জানান, বাড়িটি তাঁর ননদের। ননদ ছাড়াও, সেখানে থাকেন তিনি ও বছর পনেরোর ছেলে। স্বামী থাকেন বর্ধমানে। তিনি বলেন, ‘‘বরাবর যে কোনও সমস্যায় পরিবারের মতোই পাশে পেয়েছি মুসলিম দাদাদের। রোজ নমাজের আগে তিন তলার ছাদ পরিষ্কার করতাম, যাতে ওঁদের কোনও অসুবিধা না হয়। কোনও কোনও দিন ছাদে ওঁদের নমাজ চলার সময়ে আমিও নীচে ঠাকুরঘরে প্রার্থনা করেছি। মানুষের পাশে থাকা মানুষেরই ধর্ম।’’

Advertisement

‘কালনা আঞ্জুমান হেমায়েতউল মুসলিম মিন’ সংগঠনের সম্পাদক নাজির শেখ বলেন, ‘‘এক দিকে, করোনার ভয়। অন্য দিকে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ। নমাজের জন্য একটা ঘেরা জায়গা দরকার ছিল আমাদের অনেকের। চট্টোপাধ্যায়েরা যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন, ভোলার নয়। আল্লা ওঁদের মঙ্গল করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন