রাজ্যে নতুন ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট বিল’ পাশ হওয়ার দিনে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে শুক্রবারই বিধানসভায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কিছুক্ষণ আগেই দুর্গাপুরের পলাশডিহার একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালের বিরুদ্ধে নির্ধারিত প্যাকেজের তুলনায় ‘বেশি টাকা’ দাবি করার অভিযোগ উঠল।
কালীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে দুর্গাপুরের এক বাসিন্দা বৃহস্পতিবারই মহকুমাশাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁর মা মিনতিদেবীর বাঁ চোখের অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতাল থেকে ৩০ হাজার টাকার প্যাকেজ দেওয়া হয়। কালীদাসবাবুর দাবি, সেই টাকা মেডিক্লেম সংস্থা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে পাঠায়। ওই দিন সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে কালীদাসবাবুকে ফোনে জানানো হয়, ২৬ হাজার টাকা মিলেছে। আরও চার হাজার টাকা দিতে হবে। কালীদাসবাবু মিনতীদেবীকে ২৮ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁর দাবি, ‘‘চার হাজার টাকা না দিলে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করবেন না বলে জানান।’’
ওই ব্যক্তির দাবি, মেডিক্লেম সংস্থার পাঠানো ই-মেল ও এসএমএস-এ স্পষ্ট বলা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিক্লেম সংস্থার পাঠানো অন্য একটি ই-মেল কালীদাসবাবুকে দেখিয়ে দাবি করেন, ২৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কালীদাসবাবুর দাবি, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেখানো ই-মেলের সত্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’ হাসপাতালের তরফে পার্থ মণ্ডল বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকতে পারে। এমনটা হলে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’’
শুক্রবারই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার খরচ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘লোভ বাড়তে বাড়তে সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বর্ধমানেরই নবাবহাটের একটি নার্সিংহোম চিকিৎসার ‘বিল’ নিয়ে বিতর্ক হয়। ফের এমন অভিযোগ ওঠার পরে কালীদাসবাবুর ক্ষোভ, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালগুলির যে টনক নড়েনি, তা বোঝা গেল।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানায়, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর নতুন আইনের নির্দেশিকা না পাঠানো পর্যন্ত তা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। তবে মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’