নজরে বর্ধমান

পিঠে দেখে পিঠে কেনা, মেলায় বেড়েছে বিক্রি

লাইভ পিঠে!মেলার মধ্যেই ঢেঁকিতে ছাঁটা হচ্ছে চাল। সেই চাল দিয়ে একের পর এক সরুচাকলি, পাটিসাপটা, ভাপাপিঠে গড়ে চলেছেন মহিলারা।বর্ধমানের সাধনপুরে মাটিমেলায় উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা-মছলন্দপুরের দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে ‘লাইভ’ পিঠে-পুলি দেখতে, খেতে ভিড় উপচে পড়ছে। অনেকে পৌষ সংক্রান্তিতে বাড়িতে নিয়েও যাচ্ছেন রকমারি পিঠে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৪
Share:

ঢেঁকিতে চাল ভেঙে তৈরি হচ্ছে পিঠে। মাটি উৎসবে। ছবি:নিজস্ব চিত্র

লাইভ পিঠে!

Advertisement

মেলার মধ্যেই ঢেঁকিতে ছাঁটা হচ্ছে চাল। সেই চাল দিয়ে একের পর এক সরুচাকলি, পাটিসাপটা, ভাপাপিঠে গড়ে চলেছেন মহিলারা।

বর্ধমানের সাধনপুরে মাটিমেলায় উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা-মছলন্দপুরের দুই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে ‘লাইভ’ পিঠে-পুলি দেখতে, খেতে ভিড় উপচে পড়ছে। অনেকে পৌষ সংক্রান্তিতে বাড়িতে নিয়েও যাচ্ছেন রকমারি পিঠে।

Advertisement

জননী আনন্দধারা ও ইন্দ্রাণী আনন্দধারা গোষ্ঠীর নেত্রী সুনীতা দাসের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই হাতেগরম পিঠে গড়ে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই। তারপর থেকেই বিক্রি বেড়ে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, গত বারের চেয়ে ৬৫ হাজার টাকার বেশি বিক্রিবাটা হয়েছে।

মাটি উৎসবের উদ্বোধনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জীবন্ত প্রদর্শনী’র পরামর্শ দিয়েছিলেন। যাতে চাষবাস হোক হাতের কাজ সবটাই সামনাসামনি দেখতে পান মানুষজন। সেই ভাবনারই ছাপ এই স্টলে। আহারে বাংলার স্টলেও মাছের নানা পদ খেতে ভিড় লাগামছাড়া। স্টল-কর্তা কুণাল সরকার বলেন, ‘‘এত বিক্রি হবে ভাবতেই পারিনি।’’ খাবারের দোকানের পাশাপাশি ক্ষুদ্র, কুটির ও বস্ত্র দফতরের বিপণিতেও ভিড় উপচে পড়ছে। প্রতিটি জেলার আলাদা স্টল ছাড়াও তন্তুজ, মঞ্জুষা ও বিভিন্ন সমবায়ের বিপণি রয়েছে। সেখানেও ‘লাইভ’ চলছে বাঁশ, কাঠের ঘর সাজানোর নানা জিনিস ও পটচিত্র আঁকা। স্টল কর্তাদের দাবি, অন্য মেলার চেয়ে সাধনপুরে কৃষি খামারের এই স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গণে বিক্রির হার বেশি। এবং পুরোটাই নগদেই। কিন্তু খুচরোর জোগান নিয়ে অসুবিধে হচ্ছে না?

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুনন্দা সিংহ, পরিনীতা ঘোষমৌলিকদের দাবি, ‘‘ঘর সাজানোর বেশ কিছু জিনিস কিনেছি। বর্ধমান বা কলকাতাতেও নগদেই কিনতে হত। খুচরো সমস্যা থাকলেও কিছু করার নেই।’’ তন্তুজ থেকে শাড়ি কিনে বেরিয়ে প্রৌঢ়া সুকন্যা মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘সব পাঁচশো টাকার খুচরো দিতে মুশকিল হল ঠিকই, কিন্তু উপহারের শাড়ি কিনতেই হত।’’ পাশের ‘সুফলা বাংলা’ বিপণিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রতিদিন এক লক্ষ টাকার উপর বিক্রি হচ্ছে। ওই স্টলে মিলছে বর্ধমানের গোবিন্দভোগ থেকে জলপাইগুড়ির কালোমুনিয়া চাল। এ ছাড়াও নানা রকম খাদ্যসামগ্রী। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল থেকে সর্ষের তেলও কিনছেন অনেকে। খাদ্য দফতরের স্টলগুলির দেখভালের দায়িত্বে থাকা আব্দুল মালেকও বলেন, ‘‘মিষ্টির দোকান থেকে শুরু করে সব স্টলেই ভাল বিক্রি হচ্ছে।’’ বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা ওয়েলফেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা সৌমেন দাসেরও দাবি, ‘‘দোকানগুলিতে বিকিকিনি অনেকটা কমেছে, কিন্তু মেলায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।’’ ক্রেতাদের বড় অংশের অনুযোগ, এত বড় মেলায় ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটার বন্দোবস্ত থাকলে ভাল হতো।

মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মেলায় মুখ্যমন্ত্রীর ছোঁয়া রয়েছে। সেখানে ভিড় আর বিক্রি তো হবেই।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন