গলসি ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

আধার নেই, ফিরে যাচ্ছে বহু রোগী

এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গলসি ২ ব্লকের আদ্রাহটির ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এলে আধার কার্ড বা ভোটার পরিচয়পত্র দেখিয়ে বহির্বিভাগের টিকিট নেওয়া নির্দেশ জারি করেছেন বিএমওএইচ রাজু সানা। ওই নির্দেশে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সঙ্গে চরম অসুবিধার মুখে পড়ছেন রোগীরা। বিশেষ করে আঠারো বছরের নীচের রোগীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৭ ০৮:৫০
Share:

এই নোটিস নিয়ে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নাতনির চিকিৎসা করাতে ভারিচা গ্রাম থেকে গলসি ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন ঠাকুমা মহজিনা বেগম। কিশোরীর আধার কার্ড না থাকায় বহির্বিভাগে টিকিট কাটার সুবিধা পেলেন না তিনি।

Advertisement

বেলানা গ্রামের কিশোরী সুচিন্তা বাগদিও জ্বর নিয়ে বহির্বিভাগে এসেছিল। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানোর পরেও আধার কার্ড না থাকায় চিকিৎসা হয়নি তার।

এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গলসি ২ ব্লকের আদ্রাহটির ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এলে আধার কার্ড বা ভোটার পরিচয়পত্র দেখিয়ে বহির্বিভাগের টিকিট নেওয়া নির্দেশ জারি করেছেন বিএমওএইচ রাজু সানা। ওই নির্দেশে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সঙ্গে চরম অসুবিধার মুখে পড়ছেন রোগীরা। বিশেষ করে আঠারো বছরের নীচের রোগীরা।

Advertisement

ভারিচা গ্রামের ওই বৃদ্ধার প্রশ্ন, “আমার নাতনির ভোট দেওয়ার বয়স হয়নি, আবার আধার কার্ড নেই বলে কী ডাক্তার দেখাতে পারব না?” তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক অলোক মাঝি বিষয়টি নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন।

জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের সুপার কিংবা বিএমওএইচরা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এ রকম কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। তাঁদেরও প্রশ্ন, চিকিৎসার জন্য পরিচয়পত্রের প্রয়োজন কেন? গলসি ২-এর বিএমওএইচ রাজু সানার অবশ্য যুক্তি, “এক একজন লাইনে দাঁড়িয়ে দু’তিন বার করে টিকিট কাটছেন। আবার বাড়ি নিয়ে গিয়ে হারিয়েও ফেলছেন। এতে রোগীরা হাসপাতালের টিকিটের গুরুত্ব বুঝছেন না, পাশাপাশি অপব্যবহারও হছে। সেটা আটকাতেই আধার বা ভোটার কার্ড আনার কথা বলা হয়েছে।” যদিও রোগীদের অভিযোগ, ওই কার্ড দেখে অন্য ব্লকের রোগীদের টিকিট দিতে চাইছেন না কর্মীরা। ফলে গলসি ১ ব্লক বা আউশগ্রামের একাংশের রোগীরা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেও বহির্বিভাগের চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছেন না। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিএমওএইচ।

এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গলসি ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার পাশাপাশি পাশের গলসি ১ ব্লকের পুরাতনগ্রাম, সুন্দলপুর, শিবরাই, মল্লাসারুল ও রামনগর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসেন। প্রতিদিন কয়েকশো রোগীর লাইন পড়ে বহির্বিভাগে। সেখানেই গত ৮ অগস্ট থেকে ওই নির্দেশিকা জারি করেছে বিএমওএইচ। সোমবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা গিয়েছে, যাঁদের হাতে আধার বা ভোটার কার্ড রয়েছে তাঁরাই চিকিৎসা করানোর সুযোগ পাচ্ছেন। আবার কার্ড থেকেও পাশের ব্লকের বাসিন্দা হওয়ায় চিকিৎসা করাতে পারলেন না সুন্দলপুরের রাজিয়া বিবি।

ওই নির্দেশিকার কথা শুনে সিএমওএইচ প্রণব রায় বলেন, “এ রকম কোনও নির্দেশিকা সরকারের নেই। সেখানে বিএমওএইচ কী ভাবে ওই নির্দেশ দিল, তা খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন