প্রেসক্রিপশনে নামের পাশে লেখা এমবিবিএস (ক্যাল) (এ)। অথচ রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। পাঁচ বছর ধরে এ ভাবেই রোগী দেখছিলেন মঙ্গলকোটের চৈতন্যপুরের এক ‘ডাক্তার’। তবে বাধ সাধলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরে মৌখিক অভিযোগ করার পরে ওই ‘ডাক্তার’কে ডেকে পাঠানো হয়। শুক্রবার কাটোয়ায় সহ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে এসে নিজের ভুল স্বীকার করে মুচলেকা জমা দেন ওই ‘ডাক্তার’।
স্থানীয় ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগে মঙ্গলকোটের চৈতন্যপুরের বাসিন্দাদের একাংশ সহ মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে অনুপকুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করেন। তাঁদের দাবি, পাঁচ বছর ধরে নিজের বাড়িতে রোগী দেখছেন অনুপবাবু। সপ্তাহে দু’দিন নতুনহাটের চেম্বারেও রোগী দেখেন তিনি। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরে এসে অবশ্য ডিগ্রি না থাকার মেনে নেন অনুপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমার ডাক্তারি ডিগ্রি নেই। মাথরুন নবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশন থেকে ১৯৯৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক দিই।’’ তাঁর আরও দাবি, উচ্চ মাধ্যমিকের পর থেকেই ভাতারে মামা চিকিৎসক চন্দ্রশেখর পশারির কাছে কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। বছর পাঁচেক হল চৈতন্যপুরে নিজের বাড়িতে ফিরে চেম্বার খুলে বসেন। প্রেসক্রিপশনে এমবিবিএস (এ) ডিগ্রি লিখে ভালই পসার জমিয়েছিলেন তিনি।
এ দিন মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের শংসাপত্র ছাড়াও অল্টারনেটিভ মেডিসিনের একটি শংসাপত্রও জমা দেন তিনি। অনুপবাবুর দাবি, বছর চারেক আগে কলকাতার শ্রীগোপাল মল্লিক লেনের ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভ মেডিসিন থেকে দু’বছরের একটি কোর্স করেন তিনি। তবে সেখানে কী কী শিখেছেন, রক্তচাপ বাড়লে কী ওষুধ দিতে হয় সহ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের এ সব প্রশ্নের উত্তরে চুপ ছিলেন তিনি। অথচ পাঁচ বছর ধরে জ্বর-পেট খারাপের চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের রক্তচাপও মাপতেন তিনি।
সহ স্বাস্থ্য আধিকারিক কবিতা শাসমল বলেন, ‘‘উনি বেশ কিছু নথি জমা দিয়েছেন। দ্রুত পুরো বিষয়টির বিস্তারিত তদন্ত করা হবে। আপাতত চৈতন্যপুরের ওই চেম্বার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’