বালিখাদানে দুর্ঘটনায় চিন্তা প্রশাসনে

দিন তিনেক আগেই গলসিতে দামোদরে ডুবে দুই কিশোর-কিশোরী এবং জামালপুরে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি তুলেছিলেন, নিয়ম না মেনে বালি তোলার ফলেই বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে নদীতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০০:৫০
Share:

দিন তিনেক আগেই গলসিতে দামোদরে ডুবে দুই কিশোর-কিশোরী এবং জামালপুরে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি তুলেছিলেন, নিয়ম না মেনে বালি তোলার ফলেই বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে নদীতে। তাতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। পরপর দুর্ঘটনায় চিন্তায় পড়েছে প্রশাসনও।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের এক প্রান্তে দামোদর, অন্য প্রান্তে অজয়। দুইয়ের উপরেই রয়েছে শ’খানেক বৈধ ও অবৈধ বালি খাদান। পরিবেশ বিধি অনুযায়ী, জলের তলা থেকে বালি তোলা যেমন বেআইনি, তেমনি কোনও যন্ত্রের সাহায্যে বালি তোলাও বেআইনি। কিন্তু ঘটনা হল, জেলার বেশ কয়েকটি খাদানে যন্ত্রের সাহায্যে দেদার বালি তোলা হয়। এটাও দেখা গিয়েছে, বর্ধমান-বাঁকুড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি খাদানে যন্ত্র বসিয়ে ( দেখতে অনেকটা সাবমার্সিবল পাম্পের মত) নদীর গভীর খাদ পর্যন্ত বালি তোলার কারবার চলে। জেলার এক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কথায়, “এতে ওই জায়গায় গভীর খাদ তৈরি হয়। জলের উপরিভাগ থেকে যা বোঝা সম্ভব হয় না। ফলে স্নান করতে গিয়ে হঠাৎ করে গর্তে পড়ে গেলে কিছুই করার থাকে না।”

শনিবার দুপুরে এ রকম গর্তে পড়েই মারা গিয়েছেন গলসির গোবডাল গ্রামের সৌভিক মণ্ডল (১৪) ও অপর্ণা ঘোষ (১২)। তাদের সঙ্গে আরও তিন কিশোর স্নান করতে গিয়েছিল, কিন্তু ডুবন্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কয়েকজন। ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা ওই সব যন্ত্রে এবং বালি খাদানের অস্থায়ী কর্মীদের চালাঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বালি খাদানের ইজারাদার সরকার নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গাতেও যন্ত্রের সাহায্যে বালি তুলছে। তাতেই বিপত্তি। জামালপুরের ঘটনাতেও একই অভিযোগ ওঠে। মৃত করুণা মাইতি (৩৬) ও তাঁর মেয়ে ফুলেশ্বরী মাইতির (১৪) দেহ মেলে হুগলির ধনেখালি থেকে। তাঁদের পরিজনদেরো অভিযোগ, জলের নীচে বালি খাদানের গর্ত থাকায় এ রকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) প্রণব বিশ্বাস বলেন, “যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা নিষিদ্ধ। কঠোর ভাবে এই নিয়ম মানার জন্য ইজারাদারদের বলা হয়েছে। খাদানের এলাকা জুড়ে স্নান নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করছি।” জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুও বলেন, “পরিবেশ বিধি নিয়ে খাদান-সংলগ্ন গ্রামগুলিতে সচেতনতা করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।” খাদান-মালিকদের আবার দাবি, ২০-৩০ বছর ধরে যন্ত্র দিয়ে বালি তোলা হয়েছে। সে সব জায়গায় গর্তই থেকে গিয়েছে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন