পরীক্ষার শুরুতেই একদিকে প্রশ্নপত্রের ঘাটতি , অন্যদিকে আসন কম হওয়ায় প্রশ্ন উঠে গেল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলিতে পার্ট ১ বাংলা পাস কোর্সের পরীক্ষা ছিল। বহু কলেজেই আসনের থেকে পরীক্ষার্থী বেশি হয়ে যায়। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যাঁরা শেষ দিনে ফর্ম পূরণ করেছেন তাঁদের ধরা হয়নি। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের দাবি, কলেজগুলির তরফেই সঠিক হিসেব দেওয়া হয়নি।
রাজ কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজে ৫০০টি প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে দেখা যায় দেড়শোটি কম। বিশ্ববিদ্যালয়ে খবর পাঠানো হলে দেরি হবে ভেবে কলেজ কর্তৃপক্ষ ফটোকপি করিয়ে তা বিলি করে দেন। কলেজের টিচার ইন চার্জ তারকেশ্বর মণ্ডল জানান, এ সবের জন্য আধ ঘণ্টা বাড়তি সময় গিয়েছে। তাঁর আরও দাবি, দেড় হাজার পরীক্ষার্থী বসার ব্যবস্থা থাকলেও ৮টি কলেজ থেকে বাংলা পরীক্ষা দিতে আসেন প্রায় ২২০০ জন। ফলে বসার জায়গা নিয়ে সমস্যা হয়। কম পড়ে প্রশ্নপত্র। তাঁর দাবি, ফর্ম পূরণে দেরি হওয়ায় এই সমস্যা। তিনি আরও জানান, শেষ দিনে যাঁরা ফর্ম পূরণ করেছেন সেই হিসেবে সম্ভবত গোলমাল হয়েছে। তা থেকেই এই সমস্যা।
শহরের বিবেকানন্দ কলেজেও পরীক্ষার্থীদের বেঞ্চে বসা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। কোনও রকমে বড় বেঞ্চগুলিতে ভাগ করে পরীক্ষার্থীদের বসিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। একএকটা বেঞ্চে চার জন করে বসিয়েও পরীক্ষা দেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, আসনের থেকে পরীক্ষার্থী বেশি হয়ে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। যদিও ছাত্রছাত্রীরা এ নিয়ে বিশেষ মুখ খোলেননি। অব্যবস্থার জেরে সামগ্রিক পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়। বিবেকানন্দ কলেজ সূত্রেও জানা গিয়েছে, ১২০০ পরীক্ষার্থী বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা দিতে আসে ১৯০০ ছাত্রছাত্রী। বর্ধমান মহিলা কলেজেও ১৪০০ পরীক্ষার্থীর আসনে ১৬০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। একই সমস্যা দেখা দেয় হাটগোবিন্দপুরের বিএনদত্ত কলেজে। সেখানে ৯৬০ জনের আসনে ১৪০০ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ দিনে যাঁরা ফর্ম পূরণ করেছেন কলেজের সেই নামগুলির ঠিক হিসেব না মেলায় প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের হিসেবে গড়বড় হয়েছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ সমূহের উপ-পরিদর্শক সুজিতকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘কলেজগুলির পরিকাঠামোগত ঘাটতির জন্য ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়েছেন। আসনের থেকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সমস্যা হয়েছে।’’