আগুনে ছাই কারখানা, পথে হল ‘দেরি’, দাবি দমকলের

মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গেলে আসানসোল পুরসভা ডেপুটি মেয়র তবস্‌সুম আরার কাছেও এই দাবি জানানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কুলটি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১১
Share:

অগ্নিকাণ্ডের পরে। মঙ্গলবার কুলটির খলিলনগরে। নিজস্ব চিত্র

আগুনে ছাই হয়ে গেল কাঠ ও ডেকরেটরের দু’টি গুদামঘর এবং কাঠের আসবাব তৈরির কারখানা। সোমবার রাতে কুলটির খলিলনগরের ঘটনা। এই ঘটনার পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফের দাবি, কুলটিতে তৈরি হোক দমকলকেন্দ্র। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গেলে আসানসোল পুরসভা ডেপুটি মেয়র তবস্‌সুম আরার কাছেও এই দাবি জানানো হয়।

Advertisement

গুদামঘর দু’টি ও আসবাব কারখানার মালিক মহম্মদ আলি জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আগুন ধরে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই খবর পাঠানো হয় দমকলে। কিন্তু অভিযোগ, প্রায় দু’ঘণ্টা পরে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের প্রথম ইঞ্জিন। এই নিয়ে বাসিন্দারা বিক্ষোভও দেখান। পরে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন রাত ১০টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

দমকলের ইঞ্জিন দেরিতে পৌঁছনোর অভিযোগ মেনে নিয়েছেন দমকলকর্তারাও। সেই সঙ্গে কেন দেরি, তা-ও জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, প্রথমত, প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে আসানসোল দমকলকেন্দ্র থেকে ইঞ্জিন আসে। দ্বিতীয়ত, কুমারপুরের লেভেল ক্রসিং বন্ধ থাকায় বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দমকলের ইঞ্জিনকে। তৃতীয়ত, রাস্তা ভাল না হওয়ায় জলভর্তি ইঞ্জিন খুব জোরে চালানো যায়নি। চতুর্থত, কুলটির লেভেল ক্রসিং থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত রাস্তাটি অত্যন্ত খারাপ ও সঙ্কীর্ণ হওয়ায় ঘনঘন থামতে হয়েছে দমকলের ইঞ্জিনকে। দমকলের আধিকারিক দেবায়ন পোদ্দার বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ড থেকে কুলটি-সহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের বাঁচাতে হলে নিয়ামতপুর থেকে বরাকরের মাঝখানে একটি দমকলকেন্দ্র বা ক্যাম্প তৈরি অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

আসানসোল পুরসভা এলাকায় আসানসোল ও রানিগঞ্জে দমকলকেন্দ্র রয়েছে। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল মূল শহর, বার্নপুর, কুলটি, বরাকর, নিয়ামতপুর, সালানপুর, রূপনারায়ণপুর, বারাবনির প্রায় ২৫০ কিলোমিটার ব্যাস এলাকায় আগুন নেভানোর কাজ করতে হয় আসানসোল দমকলকেন্দ্রের মাত্র চারটি ইঞ্জিনকে। যা চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত কম বলে দাবি দমকলকর্তাদের একাংশের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর ১৪ অগস্ট বরাকর বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া কাপড়ের একটি গুদামঘরে আগুন ধরে। সে ক্ষেত্রেও দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছেছে, এমন অভিযোগ করেন বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে নিয়ামতপুর থেকে বরাকরের মাঝখানে একটি দমকলকেন্দ্র তৈরি করার দাবি জানিয়েছেন নিয়ামতপুর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক সচিন ভালোটিয়া ও বরাকর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি দীপক দুধানি।

বিষয়টি নিয়ে আসানসোল পুরসভার ডেপুটি মেয়র বলেন, ‘‘কুলটির কুলতড়ায় আমরা প্রায় এক বিঘার একটি সরকারি জমি চিহ্নিত করেছি। সেখানেই দমকলকেন্দ্র তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।’’ কুলটির বিধায়ক তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) ভাইস চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের দাবি নিয়ে দমকলমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার দমকল পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য সম্প্রতি জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি জরুরি বৈঠক করেছেন। মহকুমাশাসক (আসানসোল) প্রলয় রায়চৌধুরীও বলেন, ‘‘জেলার অগ্নি নির্বাপণ পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন