উদ্ধার: দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস থেকে বের করা হচ্ছে যাত্রীদের। নিজস্ব চিত্র
দুর্ঘটনার বিরাম নেই দুর্গাপুরে। এ বার মিনিবাস উল্টে গেল শহরের ভিতরে। জখম হলেন জনা পনেরো যাত্রী। তাঁদের দুর্গাপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। দশ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকিরা চিকিৎসাধীন। তার মধ্যে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রীর চোট গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে করঙ্গপাড়া এলাকায় সঞ্জীব সরণিতে। ৮বি রুটের বাসটি স্টেশন থেকে প্রান্তিকার দিকে যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানান, বাসটি অত্যন্ত দ্রুত যাওয়ার সময়ে সামনে এক সাইকেল আরোহীর পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে যান।
দরজার দিকটি চাপা পড়ে যাওয়ায় জখম যাত্রীরা বেরোতে পারছিলেন না। বাসিন্দারা সামনের দিকের কাচ ভেঙে উদ্ধার শুরু করেন। কোকআভেন থানা থেকে পুলিশ এসে হাত লাগায়। বাসটিতে প্রায় ৩০ জন যাত্রী ছিলেন। অর্ধেক যাত্রীই জখম হন। কারও মাথায়, কারও হাত চোট লাগে।
করঙ্গপাড়ার বাসিন্দা সুকুমার দাস দুর্ঘটনায় চোখের নীচে, নাকে চোট পেয়েছেন। দুর্ঘটনার খানিক আগে তিনি বাসে চড়েন। তিনি বলেন, ‘‘বাসটি এত জোরে চলছিল যে যাত্রীদের অনেকেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই জোর ঝাঁকুনি, তার পরেই সব যেন তালগোল পাকিয়ে গেল।’’
বাসে চড়ে বিধাননগরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী সহেলি মণ্ডল কলেজ যাচ্ছিলেন। বাঁ হাতে গুরুতর চোট পেয়েছেন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসা শুরুর পরেও তাঁর আতঙ্ক কাটেনি। জখম যাত্রী রূপা দে, রিঙ্কি সেনরা বলেন, ‘‘জাতীয় ও রাজ্য সড়কে বারবার দুর্ঘটনার খবর পাচ্ছি। কিন্তু শহরের ভিতরের রাস্তাতেও যে এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হবে ভাবিনি!’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তার ওই অংশটি জনবহুল। আশপাশে কিছু কারখানাও আছে। এ দিকে রাস্তাটি সংকীর্ণ। অথচ, মিনিবাসগুলি পরস্পরের সঙ্গে রেষারেষি করে দ্রুত গতিতে যাতায়াত করে। অবিলম্বে যান নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে দুর্ঘটনার পরে বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভও দেখান এলাকাবাসী। পুলিশ আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ জানায়, বাসটির চালক ও খালাসি পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে। বাসটি আটক করা হয়েছে।