বেহাল: বাহির সর্বমঙ্গলাপাড়ায় নোংরা নালা। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে দুর্গাপুরে, রাজ্যের অন্য প্রান্তে। আতঙ্কের আঁচ লেগেছে বর্ধমানেও। মশার দাপটে অতিষ্ঠ শহরবাসীর অভিযোগ, পুরসভা মাঝেমধ্যে মশার উৎপাত কমাতে স্প্রে করে ঠিকই, তবে তাতে কাজের কাজ তেমন হয় না।
বর্ধমান শহরের বেশিরভাগ ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশার উৎপাতে বাড়িতে জানলা খোলা দায়। দুপুর বেলাতেও মশারি টাঙাতে হয়। শহরের অনেক বাড়ি মশার হাত থেকে বাঁচতে জানলায় জাল লাগিয়েছে। তাতেও রেহাই মেলা ভার! বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই মশা বেড়ে যায়। বর্ষায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপও দেখা যায় বেশি।
শহরের বাসিন্দা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “হঠাৎ হঠাৎ একদিন কামান দাগার আওয়াজ শুনি। ছাদে উঠে দেখি ভ্যানে করে রাস্তায় ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। তাতে মশা উল্টে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ে!” আর এক বাসিন্দা সুপ্রিয় দাসেরও দাবি, “মশা মারার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তেল স্প্রে করা উচিত। সেখানে পুরসভা মাঝে মাঝে নর্দমায় স্প্রে করে, তাতে মশা বাড়িতেই ঢোকে।” এ ছাড়াও শহরের নানা জায়গায় ছোট-বড় জলাশয় সংস্কারের অভাবে আগাছায় ঢেকে গিয়েছে, নিকাশি নালাগুলিও নিয়মিত পরিষ্কার হয় না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রেই জানা যায়, গত বছরই বেশ কয়েকজন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বর্ধমান থেকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ছাড়া এনসেফ্যালাইটিস বা ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হামেশাই হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। তারপরেও মশা নিয়ন্ত্রণে অবহেলা কেন? পুরসভার দাবি, ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ লোকের বাস। কিন্তু কোনও পতঙ্গবিদ নেই। ফলে, অবৈজ্ঞানিক ভাবে মশা মারার ধোঁয়া বা তেল ছড়ানো হয়। তাতে যে ফল হচ্ছে না, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন বাসিন্দারা।
পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের যদিও দাবি, “মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য গত এক বছরে ৭৮ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। এ ছাড়াও সচেতন করার বাড়ি বাড়ি প্রচার করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। দু’পক্ষ না এগোলে মশককূলের শ্রীবৃদ্ধি ধ্বংস করতে বেগ পেতে হবে।”