দুর্গাপুরে ফের অনলাইন প্রতারণা

রামচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘বিপদ বুঝে ব্যাঙ্কে গিয়ে ডেবিট কার্ড ব্লক করি। আমার কোনও গাফিলতি নেই। তাই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছি।’’ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফের অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহকের অভিযোগ, তাঁর বেতনের অ্যাকাউন্ট থেকে সম্প্রতি কয়েক ধাপে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ওই ব্যাঙ্কের সিটি সেন্টার শাখায় বেতনের অ্যাকাউন্ট (‘স্যালারি অ্যাকাউন্ট’) রয়েছে ইসিএলের আধিকারিক সিটি সেন্টারের অম্বুজা এলাকার বাসিন্দা রামচন্দ্র পালের। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, গত ১৬ অক্টোবর মোট আট দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৬৬০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। পরে দু’দফায় ১০০ টাকা ফেরত আসে অ্যাকাউন্টে। তিনি জানান, কখনও ৫০ টাকা, কখনও ৯০ টাকা আবার কখনও বা ২৬০০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয় বলে সে দিন তিনি তাঁর মোবাইলে মেসেজ পান।

রামচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘বিপদ বুঝে ব্যাঙ্কে গিয়ে ডেবিট কার্ড ব্লক করি। আমার কোনও গাফিলতি নেই। তাই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছি।’’ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, রামচন্দ্রবাবুর অ্যাকাউন্ট যাচাই করে দেখা গিয়েছে, হুয়াং জিয়ালিয়াং নামের কেউ ওই টাকা দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে সম্ভবত কেনাকাটা করেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। রামচন্দ্রবাবু জানান, নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে তিনি মাঝেসাঝে কেনাকাটা ও মোবাইল রিচার্জ করে থাকেন। সম্প্রতি ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে জুতো কিনেছেন, মুদিখানার সামগ্রী কিনেছেন। তার এক দিন পরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়। অথচ, ডেবিট কার্ডটিও তাঁর কাছেই ছিল। রামচন্দ্রবাবুর দাবি, মোবাইলে কোনও ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) আসেনি। টাকা কাটার পরে তিনি শুধু মেসেজ পেয়েছেন।

দুর্গাপুরে অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ অবশ্য নতুন। দিন দশেক আগে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই গ্রাহক গোপালমাঠের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। তিনি দু’দিন ধরে দফায় দফায় ‘ওটিপি’ পান মোবাইলে। তাঁর দাবি, তিনি তা কাউকে দেননি। ব্যাঙ্কে গিয়ে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, মুম্বই ও বেঙ্গালুরু থেকে অনলাইন কেনাকাটা করা হয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। এর আগেও দুর্গাপুরের অনেকেই এ ভাবে অনলাইন প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, কার্ডের তথ্য হাতানোর জন্য দুষ্কৃতীরা সোয়াইপ মেশিনের মতো হুবহু দেখতে ‘কার্ড কপিয়ার’ ব্যবহার করে অনেক সময়ে। সেই যন্ত্রে কার্ডটি এক বার ঘষে দিলেই কার্ডের যাবতীয় তথ্য মিলে যায়। তার পরে কার্ডের প্রতিলিপি তৈরি করে তা আসল কার্ডের মতো ব্যবহার করা সম্ভব। এ ছাড়াও নানা ভাবে দুষ্কৃতীরা ‘ফাঁদ’ পেতে রাখে। রামচন্দ্রবাবুর অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন