সভার জেরে যানজট

হামলায় ক্ষোভ, চিকিৎসার খরচ নেবে না সিপিএম

সিপিএমের বিক্ষোভ-সমাবেশের জেরে ঘণ্টা দুয়েক কার্যত যান চলাচল বন্ধ রইল আসানসোলের জিটি রোডে। সোমবার বিকেলে আসানসোল পুরসভা থেকে খানিক দূরে শহরের সব বাসিন্দাকে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়ার দাবিতে সভা করে সিপিএম। গ্রন্থাগারের পরিচালন সমিতির ভোটে রবিবার দলের নেতা-কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদও জানানো হয় ওই সভায়। পুর এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হন কয়েক হাজার সিপিএম কর্মী-সমর্থক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২৩:৩৯
Share:

জিটি রোডে জমায়েত সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের। নিজস্ব চিত্র।

সিপিএমের বিক্ষোভ-সমাবেশের জেরে ঘণ্টা দুয়েক কার্যত যান চলাচল বন্ধ রইল আসানসোলের জিটি রোডে। সোমবার বিকেলে আসানসোল পুরসভা থেকে খানিক দূরে শহরের সব বাসিন্দাকে ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়ার দাবিতে সভা করে সিপিএম। গ্রন্থাগারের পরিচালন সমিতির ভোটে রবিবার দলের নেতা-কর্মীদের মারধরের প্রতিবাদও জানানো হয় ওই সভায়। পুর এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হন কয়েক হাজার সিপিএম কর্মী-সমর্থক।

Advertisement

এ দিন ওই সভায় হাজির ছিলেন সিপিএমে জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক, প্রবীণ নেতা অমল হালদার, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়েরা। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে এলাকার তিন লক্ষ মানুষ ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাতে পেয়েছেন মোটে ৪০ হাজার মানুষ। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই কার্ড ছাড়া কাউকে রেশন দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিচ্ছেন দোকানের মালিকেরা। ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাকি নাগরিকদের হাতেও রেশন কার্ড তুলে দিতে হবে বলে সিপিএম নেতাদের দাবি।

রবিবার আসানসোল গ্রন্থাগারের পরিচালন সমিতির ভোটকে কেন্দ্র করে সিপিএম-তৃণমূল গোলমাল বাধে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তোলে। সিপিএম নেতা তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা ওয়াসিমুল হক আহত হয়ে শহরের এক নার্সিংহোমে ভর্তি হন। এ দিন অচিন্ত্যবাবুর অভিযোগ, ‘‘গ্রন্থাগারের উন্নয়নে কয়েক কোটি টাকা সরকারি অনুদান আসছে শুনেছি। সেই টাকা লুটেপুটে খাওয়ার জন্য পরিচালন সমিতির সব ক’টি আসনে জিততে তৃণমূলের লোকেরা আমাদের কর্মীদের বেধড়ক মারধর করেছে। তবে তাতে যে কর্মীরা ভয় পাননি, আজকের জমায়েত থেকেই তা পরিষ্কার।’’

Advertisement

শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি ঘটনার পরে ওয়াসিমুলকে দেখতে নার্সিংহোমে গিয়েছিলেন। তাঁর চিকিৎসার খরচ পুরসভার তরফে বহন করার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এ দিন অচিন্ত্যবাবু বলেন, ‘‘পুরসভার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হবে না। আমাদের কর্মীরা টাকা জোগাড় করবেন।’’ যা শুনে মেয়রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিরোধীদের সম্মান দেওয়াটা আমাদের কর্তব্য। ওঁদের যদি দরকার না থাকে তবে টাকা নেবেন না।’’

পুরসভা চত্বরে এ দিন একটি চিকিৎসা শিবির থাকায় সিপিএমকে প্রায় দু’শো মিটার দূরে জিটি রোডের ধারে ফাঁকা জায়গায় সভা করার অনুমতি দেয় পুলিশ। বিকেল ৩টে থেকে প্রায় ৫টা পর্যন্ত জিটি রোড কার্যত বন্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশ গাড়িগুলিকে স্টেশন মোড়ের রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। সেগুলি লোকো মাঠের কাছে গিয়ে ফের জিটি রোডে ওঠে। সভার পরে সিপিএমের পাঁচ জনের প্রতিনিধি দল গিয়ে মেয়রকে একটি স্মারকলিপি দেয়। সিপিএমের অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়রের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ওদের আমলে বিপিএল তালিকায় প্রচুর দুর্নীতি হয়েছিল। আমরা সে সব অনেক শুধরেছি। ডিজিটাল রেশন কার্ড নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার ওদের নেই। মানুষের পরিষেবা আমরা ভাল বুঝি। যা করা দরকার আমরা করব।’’

এ দিন সভায় তৃণমূলের সরকারের নানা সমালোচনা করেন সিপিএম নেতারা। অমলবাবু বলেন, ‘‘হিন্দুস্তান কেব্‌লস বন্ধ হয়ে গেল। সে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে একটি কথাও উচ্চারণ করতে দেখা গেল না।’’ তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘গত দু’টি ভোটে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিপিএমের উপরে তাঁরা কতটা ক্ষিপ্ত। তাই মুখ্যমন্ত্রী বা তৃণমূলকে নিয়ে কোনও কথা বলা ওদের সাজে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement