বাবুরবাগে পুরসভার নিকাশি নালার উপর চলছে নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের জমিতে এবং পুরসভার নিকাশি নালার উপর বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বর্ধমানের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। দুটি ক্ষেত্রেই স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ বসির আহমেদ ওরফে বাদশার মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ।
বাবুরবাগ সিএমএস স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিলীপ চৌধুরী বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ জানিয়েছেন স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছেও। আবার পুরসভার তরফেও জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে বাদশার দাবি, ‘‘প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছি। তদন্ত করে বিষয়টি দেখতেও বলেছি। আমি ওই সব ব্যাপারে কোনও রকম ভাবেই যুক্ত নই। প্রশাসন বেআইনি নির্মান ভেঙে দিক না।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবুরবাগের ওই স্কুলের পিছনে রাস্তার দিকে ৪৭৫ ফুট লম্বা ও ২৫ ফুট চওড়া একটি জলাজমি রয়েছে। গরমের ছুটিতে সেখানেই থাম তুলে পাকা ঘর তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পরেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। তবে দু’মাস কেটে গেলেও পুরসভা বা প্রশাসন জায়গা উদ্ধারের কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। শুক্রবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওই জমির উপর বেশ কয়েকটি পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দু’টি ঘরে বসবাসও চলছে। এ ছাড়াও জলা জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে কংক্রিটের থাম। যা দেখে স্পষ্ট ওই থামের উপর পাকা বাড়ি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক শেখ বসির আহমেদের মদতেই স্কুলের জায়গা দখল করে বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এমনকী, স্কুলের পরিচালন সমিতির সভায় সম্পাদক বিষয়টি স্বীকার করেছেন। যদিও কাউন্সিলর বলেন, “আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।”
ওই ওয়ার্ডেই, বাবুরবাগ বন দফতরের পাঁচিলের গায়ে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ২০টি ও স্টুডেন্ট হেলথ হোমের পাশে নিকাশিনালার উপর প্রায় ৪০টি অস্থায়ী বাড়ি তৈরি করে কিছু পরিবার বসবাস করছে বলেও অভিযোগ। পুরপ্রধানের নির্দেশে পুরসভার সচিব বিষয়টি জেলাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে জানান। পুরসভার অন্দরের খবর, এখানেও ওই কাউন্সিলরের মদতেই অস্থায়ী নির্মাণ করে ঘর বিলি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তৃণমূলের এক প্রভাবশালী মন্ত্রী ওই ঘর ভেঙে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের এক কর্তাকে বলেছেন। তিনি পুরপ্রধানকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বার্তা পৌঁছেছে অভিযুক্তের কাছেও। তাঁর দাবি, ‘‘প্রশাসন দেখুক আমি জড়িয়ে আছি কি না। আর পুরসভা জেনেবুঝেও বেআইনি নির্মাণ না ভেঙে জেলা প্রশাসনকে জানাতে গেল কেন?’’ জবাবে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমি তো বিষয়টি আজকেই জানলাম।’’