কৃষি দফতরের তরফে প্রচার করা হচ্ছে এই বার্তা। নিজস্ব চিত্র
ভর্তুকিতে কৃষি-যন্ত্র কেনার জন্য আবেদনের সরকারি সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে দাবি করে ভুয়ো প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে এমন ভুয়ো প্রচার ছড়িয়ে পড়েছে। চাষিরা যাতে তাতে প্রভাবিত না হয়ে পড়েন, সে জন্য পাল্টা প্রচার শুরু করেছে দফতর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের যা লক্ষ্য, তার থেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এখন সেগুলি ঝাড়াই-বাছাই হচ্ছে। আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। অসৎ উদ্দেশ্যেই ভুয়ো পোস্ট করে প্রচার চালাচ্ছে কিছু লোকজন। সরকারি লোগো ব্যবহার করে যারা এমন কাজ করছে, তাদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’ পূর্ব বর্ধমানের উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভুয়ো প্রচারে যাতে চাষিরা বিভ্রান্ত না হন, সে জন্য প্রচারে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না।’’
চাষে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। পাম্পসেট, পাওয়ার টিলার, কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মতো ধান কাটা, ধান রোওয়া-সহ নানা কাজের জন্য আধুনিক যন্ত্র যাতে চাষিরা কিনতে পারেন, সে জন্য ২০১৩ সাল থেকে মিলছে সরকারি ভর্তুকি। তা পেতে সরকারি নিয়ম মেনে চাষিদের প্রথমে আবেদন করতে হয়। চলতি বছরে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছিল অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার সময়। তার মধ্যে রাজ্যে দেড় লক্ষ চাষি ভর্তুকিতে চাষের যন্ত্র কেনার জন্য আবেদন করেন।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, আবেদন জমা দেওয়ার জন্য তারিখ বাড়ানো হয়নি। অথচ, সোশ্যাল মিডিয়া মারফত একটি ভুয়ো পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে সরকারি লোগো নকল করে বিজ্ঞাপনের ধাঁচে লেখা হয়েছে, ৫-১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। ভুয়ো পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, ছোট কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে অফলাইনে আবেদন করা যাবে। নানা জেলায় দ্রুত এই পোস্ট ছড়িয়ে পড়ায় চাষিদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা কৃষি আধিকারিকদের।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পোস্টের পাল্টা হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া ,কৃষি দফতরের তরফে প্রচারের জন্য একটি লিফলেট তৈরি করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার আবেদনপত্র গ্রহণের সময়সীমা বাড়ানো হয়নি। গুজবে কান না দেওয়া, অসাধু চক্র এড়িয়ে চলা, ঠিক খবর জানতে ব্লক ও মহকুমা কৃষি দফতরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রদীপবাবুর আশঙ্কা, চাষিদের না জানার সুযোগ নিতেই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভুয়ো পোস্টের দৌলতে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছে। তিনি বলেন, ‘‘এই কাজে কখনও বেআইনি লেনদেন হয় না। চাষিরা যাতে প্রতারিত না হতে হয়, সে জন্য আমরা পাল্টা শুরু করেছি।’’