দুর্ঘটনার পরে গাড়িটি। —নিজস্ব চিত্র।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতির গাড়ি আবাসনের বেড়া ভেঙে ঢুকে পড়ল বাগানে। গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর। সোমবার রাতে দুর্গাপুরের এমএএমসি টাউনশিপের বি-১ মোড়ের ঘটনা। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে কিছুক্ষণের জন্য রাস্তা অবরোধ করেন এলাকাবাসীর একাংশ।
পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন আম্মা কলোনির বাসিন্দা বিশু ক্ষেত্রপাল (৫৪)। সদ্য কেনা একটি নীল রঙের গাড়ি এ-টাইপ মোড় থেকে দ্রুত গতিতে এসে বি-১ মোড়ের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেলে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশের তিনটি আবাসনের কংক্রিটের স্তম্ভ ও তারজালির বেড়া ভেঙে বাগানে ঢুকে পড়ে। গাড়ির এক আরোহী এমএএমসি টাউনশিপেরই বাসিন্দা অচিন রায় জখম হন। গুরুতর জখম বিশুবাবু ও অচিনবাবুকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গভীর রাতে বিশুবাবুর মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার সময়ে ওই এলাকা দিয়ে মোটরবাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন অঙ্কিত পাল। তাঁর দাবি, ‘‘গাড়ির গতি দেখে সন্দেহ হয়েছিল, চালক হয়তো মত্ত অবস্থায় রয়েছেন। ভয়ে মোটরবাইক নিয়ে সরে যাই। চোখের সামনে গাড়িটি সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মেরে বেড়া ভেঙে ঢুকে যায় আবাসনের ভিতরে। দৌড়ে গিয়ে দেখি, চালক চম্পট দিয়েছেন। সামনের আসনে বসা এক যুবকের মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে।’’ অঙ্কিতবাবুর আরও দাবি, গাড়ির দুই আরোহীও মত্ত অবস্থায় ছিলেন। নামার সময়ে পিছনের আসনের যাত্রীর পায়ে লেগে একটি মদের বোতল পড়ে যায়। যদিও পুলিশ আসার আগে গাড়ির আরোহীরা মদের বোতল সরিয়ে ফেলেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর একাংশের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। আসেন স্থানীয় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লাভলি রায়ও। কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করছিলাম। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসি। দেখি, এক জন সাইকেল আরোহী গুরুতর জখম। গাড়ির আরোহীরা মত্ত। চালককে দেখিনি। দুর্ঘটনার প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে, চালক মত্ত ছিলেন।’’ পুলিশ গাড়িটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেই সময়ে এলাকাবাসী পুলিশের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। গাড়ির মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তাঁরা। পুলিশ পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসীর একাংশ বি-১ মোড় লাগোয়া রাস্তায় গাছ ফেলে অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পরে ওই এলাকা দিয়ে মোটরবাইক, গাড়ি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলাচল করে। সাইকেল আরোহী ও পথচারীরা আতঙ্কে থাকেন। তাঁদের দাবি, দ্রুত ওই এলাকায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া চালকেরা মত্ত কি না তা পরীক্ষার ব্যবস্থার জন্যও আর্জি জানান তাঁরা। সেই সঙ্গে ফের গাড়ির মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তাঁরা। পুলিশ জানায়, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।