রাজ্যে গ্রীষ্মকালীন রক্ত-সঙ্কট মেটাতে পুলিশ-প্রশাসনকে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিবের নির্দেশ মেনে রক্তদানের ‘বার্ষিক ক্যালেন্ডার’ও তৈরি হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সংগৃহীত রক্ত পরিকাঠামোর অভাবে যাতে নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সচেতনতা প্রচার শুরু করেছে দুর্গাপুরের একটি রক্তদাতা সংগঠনের। তাদের পরামর্শ, শিবিরগুলি হোক পরিকাঠামোর সীমাবদ্ধতা বুঝেই।
‘দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টেয়ারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম’ নামে ওই সংগঠনের তরফে কবি ঘোষের দাবি, ‘‘মহকুমা হাসপাতালে তিনশো ইউনিট রক্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তার থেকে বেশি রক্ত সংগৃহীত হলে সমস্যা বাড়বে।’’
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো ২০ থেকে ২৫ মে থানাগুলিকে এবং ২৭ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পুরসভাগুলিকে রক্তদান শিবির আয়োজনের কথা জানানো হয়। ওই সংগঠনের দাবি, থানার উদ্যোগে রক্তদান শিবিরে তুলনায় বেশি সাড়া মিলছে। এই পরিস্থিতিতে একই দিনে নানা থানা, পুরসভা বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার রক্তদান শিবির হলে সমস্যা তৈরি হবে বলে দাবি করা হয়েছে।
অথচ, প্রায় সাড়ে তিনশো শয্যার দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে গড়ে ফি দিন ৩০ ইউনিট করে রক্ত দরকার হয়। গড়ে ২০ ইউনিট রক্ত ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া হয়। বাকি ক্ষেত্রে রক্তদাতা জোগাড় করে সমস্যার সমাধান করতে হয়। অথচ, যা সময়সাপেক্ষ। ফলে অনেক সময়েই তা রোগীর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ঝুঁকি হয়ে যায়। কিন্তু চাহিদা ও রক্ত সংগ্রহের মধ্যে ভারসাম্য থাকলে, সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব বলে দাবি ওই সংগঠনটির। তার জন্য নির্দিষ্ট সূচি মেনে শিবির আয়োজন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কবিবাবু। রক্তদাতাদের একাংশের দাবি, রক্ত সংরক্ষণের পরিকাঠামোও বাড়ানো হোক শহরে।
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক শঙ্খ সাঁতরা অবশ্য বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধানে দু’জন মেডিক্যাল অফিসার রয়েছেন। ক্যালেন্ডার মেনে শিবির হচ্ছে। তাই রক্ত নষ্টের সম্ভাবনা নেই।’’