চাষিদের লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে সহায়ক মূল্যে আলু কিনেছিল রাজ্য সরকার। সেই আলু পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন স্কুলের মিড-ডে মিলে। কিন্তু এর মধ্যেই আলুর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। একাধিক স্কুলের শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির দাবি, বেশির ভাগ আলু পচা। তা নিতেও অস্বীকার করেছেন তাঁরা। তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে জোর করে খারাপ আলু নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। সোমবার বর্ধমানের শ্রীপল্লির একটি উচ্চবিদ্যালয় এ নিয়ে জেলাশাসককেও চিঠি দিয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “গুণগত মান খারাপ হলে আলু না নেওয়ার কথা সরকারের নির্দেশেই বলা হয়েছে।”
স্কুলগুলির অভিযোগ, পুরসভা বা ব্লকের মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক বা কর্মীরা জোর করে পচা আলু নিতে বাধ্য করছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে শিক্ষক বা পরিচালন সমিতির কর্তাদের মধ্যে। সোমবারই শ্রীপল্লির ওই স্কুলে তিরিশ বস্তা আলু পাঠায় পুরসভা। শিক্ষকদের দাবি, আলুগুলির গুণগত মান খারাপ তো বটেই, পচা গন্ধও বের হচ্ছিল। ফলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বা অন্য শিক্ষকেরা ওই আলু নিতে নিমরাজি ছিলেন। তবে ওই খারাপ আলুই জোর করে পুরসভা দিচ্ছিল বলে শিক্ষকদের দাবি। তাঁরা বলেন, ‘‘আমরা জেলাশাসককে ফোনে বিষয়টি জানাই। পরে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। শেষপর্যন্ত কুড়ি বস্তা আলু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হয় পুর কর্তৃপক্ষ।”
জেলার অন্য স্কুলেও একই অভিযোগ। বর্ধমান শহরের ১৬৩টি স্কুলই সরকারের দেওয়া আলু ফিরিয়ে দিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। বর্ধমান পুর দফতরের মিড-ডে মিলের কর্মীরা জানান, শুধুমাত্র বর্ধমানের জন্য চার হাজার বস্তা আলু পাঠিয়েছে সরকার। প্রচন্ড গরমে আলু পচে যাচ্ছে। সে জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বলা হচ্ছে, সহায়ক মূল্যে আলু নেওয়ার পরে পচা দেখলে ফেলে দিন।
কাটোয়ার একটি স্কুলের মিড-ডে মিলের দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষিকা বলেন, “রান্না করার পরে পচা গন্ধ বের হওয়ায় আলু দিয়ে বানানো সব্জি ফেলে দিতে হয়েছে। সে দিন মিড-ডে মিল কী ভাবে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম, সেটা উপরওয়ালাই জানেন।” মেমারির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আবার আশঙ্কা, “কোনও কারণে পড়ুয়ারা অসুস্থ হলে, তার দায় আমাদের উপরই পড়বে।”