West bengal

ভাঙচুর, থানায় আগুন লাগিয়ে দিল ক্ষিপ্ত জনতা, পালিয়ে প্রাণে বাঁচল পুলিশ

ফের রণক্ষেত্র হয়ে উঠল বর্ধমানের আউশগ্রাম। থানায় ঢুকে নির্বিচারে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে ওঠে যে, শেষমেশ প্রাণে বাঁচতে থানা ছেড়ে পালিয়ে পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেন পুলিশকর্মীরা। শনিবার সকালের এই ঘটনায় আউশগ্রাম থানার দু’জন সাব ইনস্পেক্টর-সহ ৭ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ ১৭:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফের রণক্ষেত্র হয়ে উঠল বর্ধমানের আউশগ্রাম। থানায় ঢুকে নির্বিচারে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে ওঠে যে, শেষমেশ প্রাণে বাঁচতে থানা ছেড়ে পালিয়ে পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেন পুলিশকর্মীরা। শনিবার সকালের এই ঘটনায় আউশগ্রাম থানার দু’জন সাব ইনস্পেক্টর-সহ ৭ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement

কী ঘটেছে?

আউশগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢোকার ডানদিকে দোকানঘর তৈরি হওয়া নিয়ে শুক্রবার থেকেই অগ্নিগর্ভ ছিল গোটা গ্রাম। ওই দিনই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষক অরবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটক করে পুলিশ। তাঁদের কেন পুলিশ আটক করল সে নিয়ে স্কুলের সামনে ওই দিন থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল প্রায় ৬০০ পড়ুয়া। শনিবার থানা থেকে ছেড়ে দেওয়াও হয় তাঁদের। কিন্তু এর পরই গোল বাধে। ছাড়া পেয়েই তাঁরা সোজা স্কুলে চলে আসেন। স্কুলপড়ুয়াদের কাছে তাঁরা জানান, থানায় তাঁদের উপর পুলিশ অত্যাচার চালিয়েছে। চন্দ্রনাথ এবং অরবিন্দবাবুর মুখ থেকে এই কথা শুনেই ক্ষেপে ওঠে পড়ুয়ারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্কুলের প্রতিবাদে লাঠি পুলিশের, আহত পড়ুয়া

শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ তারা থানায় ডেপুটেশন জমা দেওয়ার জন্য রওনা দেয়। সঙ্গে ছিলেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অবিভাবকেরাও। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন কিছু গ্রামবাসীও। কেন তাঁদেরকে বিনা কারণে আটক করা হয়েছিল এবং কেনই বা তাঁদের উপরে অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ এই নিয়ে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। পুলিশকর্মীদের অভিযোগ, এর পরই বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন বাঁশ-লাঠি নিয়ে তাঁদের উপরে হামলা চালান। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন তাঁরা। থানা ভাঙচুর করা হয়। থানার মধ্যে ঢুকে সমস্ত নথি তছনছ করে দেওয়া হয়। কম্পিউটার, থানার সমস্ত আসবাবপত্র, দরজা-জানলা, পুলিশের দুটি গাড়িতে ভাঙচুর চলে। এমনকী থানার বিশ্রামাগারে আগুনও লাগিয়ে দেন উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। থানার আইসি ইমতিয়াজ খান বলেন, ‘‘বাঁশ-লাঠি নিয়ে থানা ঘিরে হঠাৎই আক্রমণ চালায় স্থানীয় বাসিন্দারা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। অনেকেই থানা ছেড়ে পালিয়ে পাশের একটি জঙ্গলের মধ্যে আশ্রয় নেন।’’

তবে বিক্ষোভকারীদের পাল্টা বক্তব্য, পুলিশই প্রথমে তাঁদের উপরে লাঠিচার্জ করেছে। বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কুণাল অগ্রবাল বলেন,‘‘গতকালই আলোচনার মাধ্যমে স্কুলের সঙ্গে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে জনতা থানায় ঢুকে এমন ভাবে কেন আক্রমণ চালালো তা বোঝা যাচ্ছে না।’’ এই ঘটনার পিছনে জড়িতদের খোঁজ করে আটক করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার পিছনে সিপিএমের মদত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ধমানে তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন