বাংলাদেশি সন্দেহে ধৃত শান্তা পাল। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া মডেল শান্তা পালকে বেআইনি ভাবে আধার কার্ড বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ব্যবহার করেছিলেন জাল নথি। সেই অভিযোগে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থেকে এক যুবককে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা। ধৃতের নাম শেখ মমতাজউদ্দিন। তাঁর বাড়ি মেমারির কাশিয়াড়ায়।
তদন্তকারী সূত্রে খবর, মমতাজউদ্দিনের একটি সাইবার ক্যাফে রয়েছে। সেই সাইবার ক্যাফের আড়ালে তিনি বেআইনি ভাবে জাল নথি ব্যবহার করে আধার কার্ড তৈরির কারবার চালাতেন। ২০১৯ সালে শান্তা মেমারিতে এসেছিলেন। তখনই মমতাজের সঙ্গে পরিচয় হয় শান্তার। তদন্তকারীদের দাবি, মমতাজের সাহায্যেই ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করেন বাংলাদেশি মডেল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের কাছ থেকে অনেক জাল নথি উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁর আস্তানা থেকে মিলেছে বিভিন্ন ধরনের জাল স্ট্যাম্প। এমনকি গেজ়েটেড অফিসারের নামে বানানো স্ট্যাম্প, আইনজীবীদের জাল প্যাড এবং সিলমোহরও উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। শান্তা-কাণ্ডে এর আগে নৈহাটি থেকে সৌমিক দত্ত নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ।
শান্তার বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। গত কয়েক বছর ধরে যাদবপুরের কাছে বিক্রমগড়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ২০২৩ সাল থেকে ওই বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন তিনি। বাংলাদেশে শান্তা দু’টি প্রতিষ্ঠানে মডেল হিসাবে কাজ করেন। বাংলাদেশি সিনেমাতেও কাজ করেছেন বলে দাবি। ২০১৯ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দেশে এসে তেলুগু ছবিতে কাজ করেন শান্তা। কী ভাবে সেই সুযোগ মিলেছিল, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, কলকাতায় গাড়ি ভাড়া দিতেন, পর্যটকদের ঘোরানোর ব্যবসাও করতেন শান্তা।
সম্প্রতি তিনি পর্যটনের ব্যবসা শুরু করবেন বলে কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। গোয়েন্দারা জানান, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার এক বাসিন্দার সঙ্গে সেই সূত্রে পরিচয় হয় শান্তার। ওই ব্যক্তি পরে অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশের নাগরিক শান্তা সে দেশের পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে এসে ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে শহরে থাকছেন। তার পরেই গ্রেফতার করা হয় শান্তাকে। তাঁর বিক্রমগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক আধার, ভারতীয় ভোটার এপিক কার্ড, রেশন কার্ড পেয়েছে পুলিশ। মিলেছে একাধিক পাসপোর্টও। এর মধ্যে যেমন রয়েছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট, তেমনই রয়েছে ভারতীয় পাসপোর্টও।