খাতা দেখতে ‘অনীহা’, ব্যাখ্যা দেবেন শিক্ষকেরা

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শ্যামসুন্দর কলেজের এক শিক্ষক দেড় মাস ধরে পরীক্ষার খাতা আটকে রেখে দিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা দ্রুত খাতাগুলি পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফোন করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০০:০৬
Share:

পরীক্ষার খাতা দেখায় গা নেই কলেজ শিক্ষকদের একাংশের, ফল প্রকাশে দেরির অন্যতম কারণ হিসেবে এই ‘অনীহা’কেই দায়ী করছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে এ নিয়ে বহু অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু কলেজ শিক্ষকেরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় পড়েন না, ফলে সময়ে খাতা না দিলেও কিছু করার থাকে না। এই পরিস্থিতি বদলে উদ্যোগী হয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শ্যামসুন্দর কলেজের এক শিক্ষক দেড় মাস ধরে পরীক্ষার খাতা আটকে রেখে দিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা দ্রুত খাতাগুলি পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফোন করেন। অভিযোগ, উল্টো প্রান্ত থেকে বলা হয়, ‘আপনি কি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন?’ হতচকিত কর্তা ফোন রেখে দেন।

কাটোয়া কলেজের আংশিক সময়ের এক শিক্ষিকাও দীর্ঘদিন ধরে খাতা জমা দেননি বলে অভিযোগ। এমনকী, কর্তৃপক্ষ বারবার ফোন করলে তিনি অসুস্থতার দোহাই দিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠনের নেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য শ্রীধর বন্দ্যোপাধ্যায় ওই শিক্ষিকার স্বামী, এক সরকারি আধিকারিককে ফোন করে বিষয়টি জানান। এক দিনের মাথায় ওই শিক্ষিকা পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে খাতা জমা দিয়ে যান।

Advertisement

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। হুগলির মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ তপন কার্ফা, বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়, শ্যামসুন্দর কলেজের অধ্যক্ষ গৌরীশঙ্কর মুখোপাধ্যায় ও গুসকরা কলেজের অধ্যক্ষ স্বপনকুমার পান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেন, যে সমস্ত শিক্ষক বা অধ্যক্ষ খাতা দেখতে বা খাতা নিতে অস্বীকার করবেন তাঁদের কাছে ব্যাখা চাওয়া হবে। মঙ্গলবার কর্মসমিতির বৈঠকে ওই প্রস্তাবকেই মান্যতা দেওয়া হয়। কর্মসমিতির এক সদস্যের কথায়, ‘‘প্রধান পরীক্ষকের কাছ থেকে রিপোর্ট আসার পরেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যে সব শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অসহযোগিতা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে কলেজসমূহের অধিকর্তা (ডিপিআই)-কে চিঠি দেওয়া হবে।’’

এর সঙ্গেই পার্ট ৩-এর পরীক্ষার খাতা দেখাতেও বদল আনা হবে বলে জানা গিয়েছে। এত দিন ধরে তারাবাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথিশালায় বসে খাতা দেখতেন শিক্ষকেরা। একটি বিষয়ের খাতা দেখা শেষ হলে তবেই অন্য বিষয়ের খাতা দেখা হত। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘‘উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে আমরা ঠিক করেছি, পার্ট ৩ পরীক্ষার একটা অংশের খাতা তারাবাগে বসে দেখবেন শিক্ষকরা। আর একটি অংশের খাতা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তাতে অনেক সময় কম লাগবে। এক মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করতে পারব বলেই মনে করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন