কমিশনারেটের অধীনে বুদবুদ,ধন্দ সিদ্ধান্তে

এলাকা এক জেলার অধীনে। কিন্তু থানা অন্য জেলার কমিশনারেটের আওতায়। বর্ধমান জেলা ভাগের পরে এমনই পরিস্থিতি হয়েছে বুদবুদের।প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা ভাগের পরে গলসি ১ ব্লক পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

এলাকা এক জেলার অধীনে। কিন্তু থানা অন্য জেলার কমিশনারেটের আওতায়। বর্ধমান জেলা ভাগের পরে এমনই পরিস্থিতি হয়েছে বুদবুদের।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা ভাগের পরে গলসি ১ ব্লক পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। কিন্তু ওই ব্লকের বুদবুদ থানা এলাকা আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটেই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শুক্রবার আসানসোলে পুলিশ ও প্রশাসনের বৈঠকে। প্রশাসনের কর্তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা রাজ্যে প্রথম। তবে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, সে বিষয়ে কোনও আধিকারিক মুখ খুলতে চাননি।

বুদবুদ থানার মধ্যে গোটা গলসি ১ ব্লক ও আউশগ্রাম ২ ব্লকের সামান্য অংশ পড়ে। একদল বাসিন্দার দাবি ছিল, দুর্গাপুর মহকুমার অংশ হিসেবে তাঁদের ব্লকটি নতুন জেলার মধ্যে পড়া উচিত। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িক দিক থেকে অনেক সুবিধা হবে। বর্ধমানে যাতায়াতে সুবিধের কারণে এলাকাটি পূর্ব বর্ধমানে রাখার দাবি জানিয়ে কিছু বাসিন্দা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেন। ২৪ মার্চ রাজ্য জেলা ভাগের যে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেখানে বুদবুদ থানাকে পূর্ব বর্ধমানের সদর উত্তর মহকুমার অধীনে রাখা হয়েছিল।

Advertisement

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী নতুন জেলা ঘোষণার সভা করে চলে যাওয়ার পরে কাজকর্ম পরিচালনা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা বৈঠকে বসেন। সেখানে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। বৈঠকে বুদবুদ থানা পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটে রাখার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গিয়েছে। গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পশ্চিম বর্ধমানে থানার সংখ্যা ছিল ১৬। এই বৈঠকের পরে প্রশাসন জানায়, সেই সংখ্যা ১৭ হল। কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘বুদবুদ থানা অন্তর্ভুক্ত হয়ে কমিশনারেটের সীমানা বেড়ে গিয়েছে।’’

কেন এমন সিদ্ধান্ত, সে নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে। কিছু পক্ষের মতে, গলসি ১ ব্লক দুর্গাপুর মহকুমা থেকে বের করে পূর্ব বর্ধমানে পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দুর্গাপুরে আন্দোলন হয়েছে। সরাসরি বিরোধিতা না করলেও এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আইনজীবীদের ডাকা সম্মেলনে হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে শহরের শাসকদলের নেতাদেরও। সামনে পুরভোটের সময়ে এ নিয়ে মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলেও আশঙ্কা শাসকদলের নেতৃত্বের। আবার, বুদবুদের জন্য পানাগড় শিল্পতালুকের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ভাগে। শিল্পতালুকের একাংশে জেলা পুলিশ, অন্য অংশে কমিশনারেট থাকলে সমন্বয়ের অভাবে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে অনেকের ধারণা। এ ছাড়া, পশ্চিম বর্ধমানের আয়তন পূর্বের তুলনায় অনেক কম। তাই ভবিষ্যতে গলসি ১ ব্লক পশ্চিম বর্ধমানে ফেরার সম্ভাবনাও থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের একাংশের অনুমান।

কারণ যাই হোক, এমন বিভ্রান্তির পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই অবস্থা আর কোথাও নেই। শুধু তাই নয়, গোটা একটা জেলা এক কমিশনারেটের অধীন, এমনটাও প্রথম!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন