Argument

দুর্ঘটনা রুখতে গরুর গলায় বেল্ট, বিতর্ক

শনিবার গরুর গলায় বিশেষ ধরনের রিফ্লেক্টর-বেল্ট বাঁধার কথা জানিয়েছে রানিগঞ্জ ট্র্যাফিক পুলিশ। পুলিশের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে বেধেছে বিতর্ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০৮
Share:

বাঁধা হচ্ছে এমন বেল্ট। নিজস্ব চিত্র।

জেলার নানা প্রান্তেই জাতীয় সড়কে গরু চরে বেড়ানোর ফলে দুর্ঘটনার অভিযোগ ওঠে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার গরুর গলায় বিশেষ ধরনের রিফ্লেক্টর-বেল্ট বাঁধার কথা জানিয়েছে রানিগঞ্জ ট্র্যাফিক পুলিশ। পুলিশের এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে বেধেছে বিতর্ক। পশুপ্রেমী সংগঠনগুলি, ট্রাক মালিকদের সংগঠন গোটা বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে মঙ্গলপুর মোড় থেকে রানিসায়র মোড় লাগোয়া টিবি হাসপাতাল পর্যন্ত এলাকায় গরু চরে বেড়ায়। রানিগঞ্জ ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরে জাতীয় সড়কের ওই তিন কিলোমিটার অংশে, এ কারণে ১২টিরও বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। কয়েক জন চালক জখম হয়েছেন এবং বেশ কিছু গরু মারা গিয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জে এই সড়কের মঙ্গলপুর, রামবাগান, চুনাভাটি, সুরমাপাড়ায় সড়ক থেকে কিছুটা দূরে বেশ কিছু খাটাল রয়েছে। খাটাল মালিকদের সচেতন করতে একাধিক বার এ নিয়ে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতেই এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয় বলে রানিগঞ্জ ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি। তাতে গরুগুলির অবস্থান সহজেই বোঝা যাবে ও দুর্ঘটনা কমবে বলে দাবি।

তবে বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। রানিগঞ্জের একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের সম্পাদক সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এটা এক ধরনের হাস্যকর উদ্যোগ। রাস্তায় গরু চরানোটাই আইন বিরুদ্ধ। পুলিশ-প্রশাসন গরুগুলির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করছে না। তার বদলে এর মাধ্যমে পরোক্ষে খাটাল মালিকদের রাস্তায় গরু চরানোর বিষয়ে প্রশ্রয় দিচ্ছে।” বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চালকেরাও। পলাশ আচার্য নামে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের প্রশ্ন, গরুগুলিকে সাধারণত রাস্তার ডিভাইডারে চরতে দেখা যায়। এ বার, হঠাৎ কোনও গরু ডিভাইডার থেকে নেমে রাস্তায় চলে এলে, সে ক্ষেত্রে কী হবে! বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন ট্রাক মালিকেরাও। ‘আমরাসোঁতা-পঞ্জাবি মোড় ট্রাক টিপার্স ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যকরী সভাপতি দয়াশঙ্কর রায়ের কৌতূহল, পুলিশের এই পদক্ষেপ কী ভাবে, দিনের বেলাতেও কার্যকর হবে! তাঁর বক্তব্য, “এটা এক ধরনের প্রহসন। খাটাল মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা দরকার। প্রয়োজনে সরকারি আইন অনুযায়ী, গরুগুলি বাজেয়াপ্ত করে আইনি ব্যবস্থানিতে হবে।”

Advertisement

যদিও, বিতর্কের মুখে আর কোনও কথা বলতে চায়নি রানিগঞ্জ ট্র্যাফিক পুলিশ। পাশাপাশি, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য ডিসি (ট্র্যাফিক) আনন্দ রায়কে ফোন করা হলেও তিনি উত্তর দেননি। রাত পর্যন্ত জবাব মেলেনি মেসেজেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন