৪০ কোটি বিদ্যুৎ বিল অনাদায়ী

বকেয়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। এ ছাড়া বাকি ২৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি শিল্প সংস্থার কাছ থেকে।

Advertisement

সুশাম্ত বণিক 

আসানসোল শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় থেকে প্রায় ৪০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ-বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। কিন্তু তা আদায়ে অতীতে সে ভাবে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোল ডিভিশন সে ভাবে সক্রিয় হয়নি বলেই জানা গিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে। এই বকেয়া আদৌ কতটা আদায় সম্ভব, তা নিয়েও ধন্দে রয়েছেন ডিভিশনের কর্তারা।

Advertisement

বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার আসানসোল ডিভিশন জানায়, ওই ৪০ কোটির মধ্যে ১৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে একাধিক সরকারি সংস্থায়। সবচেয়ে বেশি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দফতরে। বকেয়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। এ ছাড়া বাকি ২৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি শিল্প সংস্থার কাছ থেকে।

এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ-বিল আদায়ে কোন ডিভিশন কতখানি সক্রিয়, তা নিয়ে সম্প্রতি একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে আসানসোল ডিভিশনের এই বিপুল পরিমাণ বকেয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্তারা। এর পরেই দ্রুত বকেয়া আদায়ের নির্দেশ দেন তাঁরা। প্রয়োজনে আইনি সাহায্য নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়। ডিভিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কয়েক কোটি টাকা বিদ্যুৎ-বিল বাকি থাকায় আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের কাছে তা একাধিক বার মেটানোর আর্জি জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ-কর্তাদের অভিযোগ, বিল আদায়ের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া মিলছে না। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকেও বকেয়া মেটাতে আর্জি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কমিশনারেটের ডিসিপি (সদর) অভিষেক গুপ্তা অবশ্য বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরের আর্জি শোনামাত্র আমরা বকেয়া বিল মিটিয়ে দিচ্ছি।’’ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জানায়, কলকাতা সদর কার্যালয় থেকেই এখন সরাসরি বিদ্যুৎ বিল মেটানো হচ্ছে।

Advertisement

সরকারি সংস্থাগুলির পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি সংস্থাতেও বহু বছর ধরে বিদ্যুৎ বিল বাকি পড়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক আধিকারিক জানান, বিল আনাদায়ী থাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের দায়ববদ্ধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পদস্থ কর্তারা। তাঁদের ধারণা, নিয়মিত বিল আদায়ের ক্ষেত্রে কর্মীদের গাফিলতিই প্রধান কারণ। এ বিষয়ে বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বকেয়া বিল আদায়ে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আসানসোল ডিভিশনের মুখ্য আধিকারিক শুভেন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছি না। পদস্থ কর্তাদের নির্দেশ মেনে

কাজ করছি।’’ তবে বিপুল অঙ্কের বকেয়া সংক্রান্ত সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দফতর ‘প্রিপেড মিটার’ ব্যবস্থা চালু করছে বলে জানান শুভেন্দুবাবু। এই ব্যবস্থা প্রথমে সরকারি, পরে বেসরকারি সংস্থা ও গৃহ সংযোগে চালু হবে। এই ব্যবস্থায় গ্রাহককে প্রথমেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে একটি ‘চিপ’ নিতে হবে। মিটারে সেই ‘চিপ’ ঢুকিয়ে দিলেই বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে যাবে। টাকা শেষ হয়ে গেলে নিজে থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হবে। (চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন