ফের পাকড়াও পূর্বস্থলীতে

রাতে থানা থেকে চম্পট ধৃত যুবকের

রাতে তাকে পাকড়াও করে এনেছিল পুলিশ। সকালে দেখা যায়, সে বেপাত্তা। থানা থেকে এ ভাবে আসামি উধাও হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল পূর্বস্থলী থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:০৫
Share:

লাল মহম্মদ। নিজস্ব চিত্র

রাতে তাকে পাকড়াও করে এনেছিল পুলিশ। সকালে দেখা যায়, সে বেপাত্তা। থানা থেকে এ ভাবে আসামি উধাও হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল পূর্বস্থলী থানার পুলিশ। শুরু হয় খোঁজ। দিনভর খোঁজার পরে রাতে ফের পাকড়াও হল চুরিতে অভিযুক্ত। তবে গোটা ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে থানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে।

Advertisement

শনিবার রাতে পূর্বস্থলী থানায় ধরে আনা হয়েছিল লাল মহম্মদ শাহজি নামে ওই যুবককে। কী ভাবে সে পালিয়ে গেল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশকর্তারা জানিয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। কেউ দোষী প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পূর্বস্থলীর যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা লালচাঁদ মল্লিক শনিবার রাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান, রাত পৌনে ১২টা নাগাদ তাঁর বাড়ির ছাদ দিয়ে ঢুকে চুরির চেষ্টা করে লাল মহম্মদ। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ বছর একত্রিশের লাল মহম্মদকে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে থানা থেকে অভিযুক্তদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতির সময়ে দেখা যায়, লাল মহম্মদ নেই। শোরগোল শুরু হয় থানায়। পুলিশ আধিকারিক থেকে সিভিক ভলান্টিয়াররা খোঁজ করতে নামেন। অভিযুক্তের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। রাতে তার এলাকা থেকেই লাল মহম্মদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

সিসিটিভির নজর ও উঁচু পাঁচিল এড়িয়ে কী ভাবে চম্পট দিল ওই যুবক? থানার একটি সূত্রে জানা যায়, রাতে থানায় কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের ঘরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল লাল মহম্মদকে। ভোরে যখন নিরাপত্তারক্ষীরা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন, সেই সুযোগে চুপিসারে থানা থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। থানার মূল দরজা খোলা থাকায় বাইরে বেরিয়ে যায় অনায়াসে। সোমবার আদালতে তোলার সময়ে লাল মহম্মদ দাবি করে, ‘‘রাতে ডিউটি অফিসারের টেবিলের সামনেই ছিলাম। ভোরে সুযোগ পেয়েই বেরিয়ে পড়ি।’’

থানা থেকে বেরিয়ে রেললাইন ধরে প্রায় ১৪ কিলোমিটার হেঁটেই যজ্ঞেশ্বরপুরে পৌঁছয় সে, দাবি লাল মহম্মদের। তার আরও দাবি, ‘‘এলাকায় ফিরতে দিদি বলল, পালিয়ে এসে ভুল করেছি। আত্মসমর্পণ করতে বলল। তাই ধরা দিলাম।’’ তার দিদি মনোয়ারা বিবিরও বক্তব্য, ‘‘সকাল থেকে পুলিশের লোকজন বাড়িতে আসছিল। রাত ৮টা নাগাদ এলাকার এক মহিলা জানান, ভাই বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে রয়েছে। ওকে ডেকে বোঝানোর পরে ফের ধরা দিতে রাজি হয়।’’ যদিও পুলিশের দাবি, লাল মহম্মদকে খুঁজে ধরে আনা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে থানায় ডিউটি অফিসার ছিলেন এক এএসআই। কেন লাল মহম্মদকে লক-আপে না রেখে ঘরে বসিয়ে রাখা হল, সে প্রশ্নে থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাতে ধরে আনা হলেও তখনও লিখিত অভিযোগ হয়নি লাল মহম্মদের বিরুদ্ধে। খাতায়-কলমে গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কোনও অভিযুক্তকে লক-আপে রাখা হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন