বিপত্তি: জল ঢুকে এমনই হাল হয় রেলপারের। —ফাইল চিত্র।
অল্প বৃষ্টি হলেই নদীর জলে প্লাবিত হয় দু’পাড়ের নানা এলাকা। বাসিন্দারা বারবার অভিযোগ করেছেন, গাড়ুইয়ের নদীবক্ষে নির্মাণকাজ চলা, একাংশের বাসিন্দাদের আবর্জনা ফেলা-সহ নানা কারণেই এমন বিপত্তি ঘটেছে। সম্প্রতি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দু’কোটি টাকার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্যের সেচ দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি আসানসোল পুরসভার।
আসানসোল মূল শহরের প্রায় মাঝামাঝি বয়ে গিয়েছে এই নদী। কিন্তু দু’-এক দিন বৃষ্টি পড়লেই যন্ত্রণা শুরু হয় কল্যাণপুর, রেলপার, ডিপোপাড়া, ধাদকা-সহ বেশ কিছু এলাকায়। বাসিন্দারা জানান, টানা কিছুক্ষণ বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে যায় এই এলাকাগুলি। জল নামতেও সময় লাগে। ফলে টানা কয়েকদিন জলবন্দি হয়ে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়া, রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে ছোটাও বেশ কষ্টসাধ্য বলে জানান তাঁরা। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতেও এই হাল হয়েছিল বলে জানান বাসিন্দারা।
রেলপারের শাকিল আহমেদ, ডিপোপাড়ার পবিত্র দাস, কল্যাণপুরের সিঞ্চন সেনগুপ্তদের ক্ষোভ, ‘‘বারবার গাড়ুইয়ের জলে ভাসছে এলাকা। বছরভর একাধিকবার জল-যন্ত্রণা আমাদের জন্য দ্বস্তুর।’’
কেন এই হাল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসিন্দাদের একাংশ নদীতেই যথেচ্ছ আবর্জনা ফেলেন। ফলে নদীর নাব্যতা কমে গিয়েছে। আরও অভিযোগ, নদীবক্ষেই নির্মাণ খাড়়া করছেন এক শ্রেণির জমি মাফিয়া। অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এ সব চললেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
যদিও পুরসভার দাবি, নদী সাফ করে দু’পাড় বাঁধানো, সৌন্দর্যায়ন-সহ বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরে। আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, ‘‘অর্থ অনুমোদন হয়ে গেলেই নদী সংস্কারের যাবতীয় কাজে দ্রুত হাত পড়বে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেচ দফতরের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি এলাকায় এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে। মেয়র জানান, প্রকল্প রূপায়ণে পুরসভার অধ্যক্ষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হয়েছে।
নদী বাঁচাতে বাসিন্দাদের কাছেও আর্জি জানিয়েছেন পুরসভার কর্তারা। তাঁদের দাবি, বহু বাসিন্দার ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঘরের আবর্জনা ফেলছেন নদীতে। এর জেরে সমস্যা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালানো হবে বলে পুরসভা জানায়। পুরসভার আরও আশ্বাস, জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।