ভোটের ফলের দিন। নিজস্ব চিত্র
ভোটের ফল বেরনোর পরেও চাপান-উতোর চলছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব বিরোধীরা। মানতে নারাজ শাসক দল। তবে এ সব নিয়ে বিশেষ হেলদোল নেই প্রসূন বাউরি, বাবলু বাউরিদের। পুজোর আগে বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে ভোট, খুশি এই বাজনাদারেরা।
পুজো, বিয়েবাড়ির মতো ভোট এলেও ডাক পড়ে বাজনার দলের। দুর্গাপুরের কুড়ুলিয়া ডাঙা, কলাবাগান ইত্যাদি এলাকায় রয়েছে এমন কয়েকটি দল। মে মাসে পুরভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় খানিকটা হতাশ হন বাজানদারেরা। শেষ পর্যন্ত অগস্টে ভোটের কথা ঘোষণা হতেই মুখে হাসি ফোটে তাঁদের।
বাজনাদারেরা জানান, গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের লোকজন আগাম বায়না করেছিলেন। সেই মতো তাঁরা ফল ঘোষণার দিন হাজির হন গণনাকেন্দ্রে। কিন্তু শহরের দু’টি আসনেই তৃণমূল হেরে যাওয়ায় বাড়ি ফিরে যেতে হয় বাজনাদারদেরও। এ বার পুরভোটে অবশ্য আর শুকনো মুখে বাড়ি ফিরতে হয়নি। শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই তৃণমূল জেতায় সকাল থেকে গণনাকেন্দ্রের সামনে বাজনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বাবলুবাবুদের।
বাজনার এক-একটি দলে রয়েছেন গড়ে ৩০-৩৫ জন। ভোটের ফলের দিন নানা ভাগে ভাগ হয়ে বাজনা বাজিয়েছেন তাঁরা। ঢাক, ঢোল, তাসা, ব্যান্ড, ভেঁপু নিয়ে সঙ্গ দিয়েছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। প্রসূনবাবু, বাবলুবাবুরা বলেন, ‘‘আমরা সারা বছর কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ দিনমজুরি করি। বিয়েবাড়ি বা পুজোর সময়ে বাজানোর জন্য সন্ধ্যায় সবাই মিলে অনুশীলন করি। ভোট এলে উপরি কিছু রোজগার হয়।’’ তাঁরা আরও জানান, এ বার টানা কয়েক ঘণ্টা বাজানোর সুযোগ হয়েছে। ফলে, রোজগারও একটু বেশি হয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘পুজোর আগে এ যেন মেঘ না চাইতেই জল। পরিবারের সবাই খুশি।’’
তবে এরই মধ্যে কিছুটা আশাহত বাজনাদারেরা। উত্তরবঙ্গে বন্যার জন্য শহরে বিজয় মিছিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। প্রসূনবাবুরা বলেন, ‘‘মিছিল হলে আর এক দফা রোজগার হতো। তা আর হল না। তবে বন্যায় বহু মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। প্রার্থনা করি, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হোক।’’