মেডিক্যালে জালিয়াতি

গাফিলতি মেনে হাসপাতালে চিঠি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের

অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও নজরে এসেছিল আগেই। ওই ঘটনায় নিজেদের গাফিলতির কথা মেনে নিলেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।সোমবার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল কলেজ শাখার ম্যানেজার জয়ন্তী রাজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪৫
Share:

অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও নজরে এসেছিল আগেই। ওই ঘটনায় নিজেদের গাফিলতির কথা মেনে নিলেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সোমবার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল কলেজ শাখার ম্যানেজার জয়ন্তী রাজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার জানিয়েছেন, ভুয়ো চেকের মাধ্যমে কী ভাবে টাকা স্থানান্তরিত হল সে বিষয়ে তাঁরা উচ্চপর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছেন। পাশাপাশি সরকারি টাকা ফেরত দেওয়ারও প্রক্রিয়া শুরু করেছে ব্যাঙ্ক। মঙ্গলবার বর্ধমানের তদন্তকারী অফিসার জুলফিকার আলি হাসপাতালে গিয়ে আসল চেকগুলি বাজেয়াপ্ত করেন। এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আটকাতে এ বার মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবার কথাও ভাবছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কী ঘটেছিল?

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে জানানো হয়, কলকাতার বালিগঞ্জের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে টাকা তোলার জন্য চেক দেওয়া হয়েছে, তাতে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের সই ঠিক নেই। এরপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখেন, হাসপাতাল সুপার ও অ্যাকাউন্ট অফিসারের সই জাল করা হয়েছে। সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘ওই চেক ধরা প়়ড়ার আগেই ৫টি চেক দিয়ে ২৬ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। আরএসভিওয়াই প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা খোওয়া গিয়েছে।’’ ওই দিন বিকেলেই বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস অফিসার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, কলকাতার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে চেকগুলি ভাঙানো হয়েছে। অতনু দাশগুপ্ত, উত্তর চব্বিশ পরগণার কদম্বগাছির হেমন্ত বসু নগরের তপন নন্দী, কলকাতার মেহেন্দি স্ট্রিটের মনোজ কুমারের অ্যাকাউন্টে টাকাগুলি গিয়েছে বলেও পুলিশ জেনেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, হাসপাতালের কাছে থাকা চেকগুলি পুরনো। অথচ ভুয়ো চেকগুলি ব্যাঙ্কের নতুন নিয়মে তৈরি। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ওই অ্যাকাউন্টের লেনদেন আপাতত বন্ধ রেখেছে।

এ দিকে, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরাতে তৎপর হয়েছেন। তাঁদের দাবি, পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উঠলেই নতুন অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করা হবে। সেই মতো মঙ্গলবার নতুন অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে। হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই অ্যাকাউন্ট জালিয়াতদের হাতে পড়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার প্রায় দু’কোটি টাকা এখনও অ্যাকাউন্টে রয়েছে। ওই টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে না সরালে বিপদ বাড়তে পারে।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অ্যাকাউন্ট অফিসারকে মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে।

পুলিশের ধারণা, ওই অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নিয়মিত পরিচিতি রয়েছে, এমন লোকজনেরাই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। জানা যায়, ব্যাঙ্কের ম্যানেজার জয়ন্তী রাজন সোমবার হাসপাতালের সুপারকে চিঠি দিয়ে এবং দেখা করে তাঁদের কর্মীদের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন