বিচারক-বয়কটের ডাক পকসো কোর্টে

বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা অভিযোগ করেন, “বিচারকেরা আইনজীবীদের সঙ্গে দিনের পর দিন দুর্ব্যবহার করছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আইনজীবীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার না করার জন্য বিচারকদের অনুরোধ জানিয়েছিলাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বিচারকদের বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের এক সভায় ঠিক হয়, অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (দ্বিতীয়) তথা পকসো আদালতের বিচারক সুযশা মুখোপাধ্যায় ও চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রঞ্জিনী কাশ্যপকে বয়কট করা হবে। সন্ধ্যায় জেলা জজকে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানান ওই সংগঠনের সদস্যেরা। ওই দুই বিচারকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা অভিযোগ করেন, “বিচারকেরা আইনজীবীদের সঙ্গে দিনের পর দিন দুর্ব্যবহার করছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আইনজীবীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার না করার জন্য বিচারকদের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত বয়কটের রাস্তায় যেতে হল। জেলা জজকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে।’’ আজ, শুক্রবার আদালত খোলার পরে বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত লিখিত ভাবে জানানো হবে বলে তাঁর দাবি। এ দিনের বৈঠকে আরও তিনি পাঁচ জন বিচারকের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে।

আইনজীবীদের একাংশের দাবি, পকসো আদালতের বিচারক তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। স্পেশাল পিপি (সরকারি আইনজীবী) ছাড়া অন্য কোনও সরকারি আইনজীবীদের শুনানিতে যোগ দিতে দিচ্ছেন না। পকসো মামলা ছাড়া অন্য কোনও মামলাও শুনছেন না। চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ। আবার আইনজীবীদের আর একটি অংশেরই দাবি, সব অভিযোগ ‘মনগড়া’। তাঁদের পাল্টা দাবি, বার অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজনের ‘কথা মতো’ বিচারকেরা না চললেই তাঁদের বয়কট করা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর প্রত্যেক বিচারকই তাঁদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করেন বলে বয়কট করা হয়। পুরো বিষয়টিই হাস্যকর হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বিচারপ্রার্থীরা চূড়ান্ত অসুবিধেয় পড়বেন বলেও তাঁদের দাবি।

Advertisement

তাঁরা জানান, জেলায় একমাত্র বর্ধমান আদালতেই পকসো মামলার শুনানি হয়। সে জন্য চাপও বেশি থাকে। ফলে বিচারকেরা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চান। আর চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব নেওয়ার পরে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করছেন। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা মামলার বিচার শেষ করে সাজাও দিয়েছেন। এটাই কয়েকজনের আপত্তির কারণ বলরে তাঁদের দাবি। আইনজীবীদের একাংশের দাবি, একটা সময় বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহাকে বয়কট করেছিল আইনজীবীরা। জেলা জজকে হস্তক্ষেপ করতে হয় সে সময়। বয়কট করে যে আইনকে বশে আনা যায় না, সেটাও ভাল করেই জানে আইনজীবীরা। তারপরেও তাঁদের এমন সিদ্ধান্ত ভুগতে হয় বিচারপ্রার্থীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন