jute cultivation

টানা বৃষ্টিতে ধান-পাটে সুবিধা, আনাজ চাষে সতর্কতা

ঝলসা রোগ দেখা দিলে চাষিদের প্রতি লিটার জলে ট্রাইসাইক্লাজোল ০.৭৫ গ্রাম এবং অণুখাদ্য হিসেবে জিঙ্কের মিশ্রণ মিশিয়ে ছড়ালে চাষিরা উপকৃত হবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০০:৩৩
Share:

জমিতে জল কালনায়।

টানা বৃষ্টি বুধবার রাত থেকে। বৃহস্পতিবারও দিনভর দফায়-দফায় চলল তা। এই বৃষ্টি চাষে মিশ্র প্রভাব ফেলবে বলে দাবি জেলার কৃষি-কর্তাদের।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় আমন ধানের। মাসখানেক ধরে জমিতে সেই চাষ শুরু হয়েছে। চাষিরা জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’ ও তার পরে কিছু দিন ভাল বৃষ্টি হয়েছিল। তবে তার পরে বেশ কিছু দিন ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় আমন নিয়ে চিন্তা বাড়ছিল। তবে সাম্প্রতিক ভাল বৃষ্টি ধান গাছের বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে তাঁদের আশা। কিন্তু বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে চিন্তার কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন চাষিদের অনেকে। তাঁদের দাবি, সে ক্ষেত্রে নিচু জমিগুলিতে জল জমে ধান গাছে ঝলসা রোগ দেখা দিতে পারে।

কৃষি-কর্তাদের পরামর্শ, পরিস্থিতি নিয়ে সজাগ থাকতে হবে চাষিদের। নিচু জমি থেকে নালা করে জল বার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধানজমির নীচের অংশ ঘেঁটে বিঘা প্রতি জমিতে ৫-৭ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। জেলার অন্যতম সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘জমিতে দীর্ঘদিন জল বেশি থাকলে শিকড়ের বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। ধানগাছের পাশকাঠি ছাড়তে সমস্যা হবে। তাই নিচু এলাকার জমিতে বেশি জল থাকলে দ্রুত বার করার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ তিনি জানান, ঝলসা রোগ দেখা দিলে চাষিদের প্রতি লিটার জলে ট্রাইসাইক্লাজোল ০.৭৫ গ্রাম এবং অণুখাদ্য হিসেবে জিঙ্কের মিশ্রণ মিশিয়ে ছড়ালে চাষিরা উপকৃত হবেন।

Advertisement

কৃষি-কর্তাদের দাবি, বৃষ্টি এবং স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় অনেক চাষি মাজরা পোকা দমনের জন্য দানাদার কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কিন্তু মাজরা পোকা না হলে ওই ওষুধ প্রয়োগে মারা যেতে পারে চাষে সহায়ক পোকারা। তাতে বাদামি শোষক পোকার দল হামলা শুরু করতে পারে। এই সময়ে জলাশয়ে ও জমিতে পাট পচানোর জন্য ভাল বৃষ্টি দরকার হয়। তাই এই বৃষ্টি পাট চাষেও কাজে আসবে বলে জানায় কৃষি দফতর।

তবে বেশি বৃষ্টির জেরে কমে যেতে পারে আনাজের উৎপাদন। কালনা, পূর্বস্থলী ১ ও ২, মঙ্গলকোট, মেমারি ২ ব্লকের অনেক চাষির অভিযোগ, আনাজের জমিতে জল জমে গিয়েছে। তাঁরা জানান, প্রথমে ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা ও তার পরে সম্প্রতি ভাগীরথীর জল দু’পাশের চরে উপচে পড়ায় বহু আনাজের খেত নষ্ট হয়েছে। পূর্বস্থলীর আনাজ চাষি সাবির শেখ বলেন, ‘‘এর পরে আরও বৃষ্টি হলে ঢেঁড়শ, বরবটি, উচ্ছে-সহ নানা ফসলের উৎপাদন তলানিতে ঠেকবে।’’ পার্থবাবু বলেন, ‘‘আনাজের খেতে জল বেশি জমে গেলে, ছত্রাকজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা থাকে। তাই চাষিদের সতর্ক থাকতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন