কারখানায় ঝাঁপ, ভোটের প্রচারে একশো দিনের কাজ

গত এক বছরে পশ্চিম বর্ধমানের ৮৩৩টি গ্রাম সংসদে একশো দিনের প্রকল্পে বহু কাজ হয়েছে। গ্রামবাসীরা কাজ পেয়েছেন। স্থায়ী সম্পদও তৈরি হয়েছে। ফলে শিল্পে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কমলেও গ্রামে গঞ্জে অনেক পরিবারেরই ভরসা এই কাজ। ভোট প্রচারেও সেই সাফল্যই তুলে ধরতে চায় তৃণমূল।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

নতুন শিল্প তো দূর, গত কয়েক বছরে বেশ কিছু চালু কারখানারও ঝাঁপ পড়েছে এই শিল্পাঞ্চলে। কর্মসংস্থানের প্রশ্নে এ বিষয়টি পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে কাঁটা হতে পারে বলে মনে করছেন শাসক দলের নেতাদের একাংশ। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই কাঁটা তুলতে তাদের বড় ভরসা, গ্রামাঞ্চলে একশো দিনের প্রকল্পের সাফল্য।

Advertisement

গত এক বছরে পশ্চিম বর্ধমানের ৮৩৩টি গ্রাম সংসদে একশো দিনের প্রকল্পে বহু কাজ হয়েছে। গ্রামবাসীরা কাজ পেয়েছেন। স্থায়ী সম্পদও তৈরি হয়েছে। ফলে শিল্পে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কমলেও গ্রামে গঞ্জে অনেক পরিবারেরই ভরসা এই কাজ। ভোট প্রচারেও সেই সাফল্যই তুলে ধরতে চায় তৃণমূল।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে এই জেলায় গড়ে প্রায় ৬০ দিন করে কাজ পেয়েছেন বাসিন্দারা। অনেকে বছরে একশো দিনের বেশি কাজ পেয়েছেন। দিনে ১৮১ টাকা করে মজুরি পেয়েছেন তাঁরা। দৈনন্দিন কাজকর্মের পাশাপাশি এই কাজ উপরি রোজগারের সুযোগ করে দিয়েছে অনেককে। আবার পুকুর খনন করে মাছ চাষ, পুকুর পাড়ে ফলের বাগান তৈরি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর রোজগারের ব্যবস্থা করা, নদী সংস্কার করে চেক ড্যাম তৈরি করে সেচের ব্যবস্থা, নদীর পাড়ে গাছ লাগানো, অর্জুন গাছের বাগান বানিয়ে তসর চাষ, পোল্ট্রি গড়ে তোলা, গ্রিনহাউস পদ্ধতিতে চাষ, খাদানের জলে মাছ চাষের মতোও বহু উদ্যোগ করা হয়েছে। সঙ্গে রাস্তা তৈরি, শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বাড়ি তৈরি, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা, শ্মশান ঘাটের সংস্কার, ইকো পার্ক তৈরি, খেলার মাঠের সংস্কারের মতো কাজও হয়েছে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে যেমন রোজগারের ব্যবস্থা, স্থায়ী সম্পদ তৈরির কাজ হয়েছে তেমনই গ্রামের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে বলেও দাবি প্রশাসনের।

Advertisement

একশো দিনের কাজে সেরার তকমা পাওয়া দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের তৃণমূল নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পের সফল রূপায়ণে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে সে কথা মনে করিয়ে দিতে চাই আমরা।’’ দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সাহায্যে গ্রাম ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে সেই সব প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরা হবে।’’

যদিও শাসক দলের এই দাবিতে অনেক ফাঁক দেখছেন বিরোধীরা। সিপিএমের দাবি, একশো দিনের প্রকল্প রূপায়ণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। খাতায়-কলমে কাজ হয়েছে আর তৃণমূল নেতাদের পকেট ভরেছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘স্বচ্ছ ভোট হলে উপযুক্ত জবাব পাবে তৃণমূল। প্রথম দিন থেকেই পুলিশ ও প্রশাসনের সামনে মনোনয়নপত্র তুলতে যেভাবে আমাদের কর্মীদের হুমকি দেওয়া হল, তা থেকেই স্পষ্ট, ওরা ভয় পাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন