ভোটের বাজারে এসি গাড়িতে ‘স্নিফার ডগে’রা

গত কয়েক মাস ধরে জেলা পুলিশের ‘ট্র্যাকার ডগ’-এর জায়গাটি ফাঁকা। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ হয়ে ‘ট্র্যাকার ডগ’ মিলি গত ১২ ডিসেম্বর মারা যায়।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

বাহন: এমন গাড়িতেই ঘুরবে টিনারা। নিজস্ব চিত্র

মনোনয়ন পর্ব শেষ হতে আর কয়েকদিন। তারপরেই শুরু হবে প্রচার, ভিআইপিদের আনাগোনা। কাজ বাড়বে টিনারও। ঠা ঠা রোদে ‘ডিউটি’ করতে এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত ছুটতে হবে তাকে। টিনার মতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কুকুরেরা যাতে বিস্ফোরক বা অপরাধীদের খুঁজতে গরমে কাহিল হয়ে না পড়ে তাই শীততাপনিয়ন্ত্রিত গাড়ির ব্যবস্থা করতে চলেছে প্রশাসন।

Advertisement

জেলা পুলিশের ‘ডগ স্কোয়াডে’ অপরাধীদের গতিবিধি চিহ্নিত করার জন্য থাকে দক্ষ ‘ট্র্যাকার ডগ’। তার কাজ হল কোনও রহস্যজনক খুনের ঘটনা বা লুঠের ঘটনার পরে অপরাধী কোথায় পালিয়েছে বা কোন এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে, ঘটনাস্থলে ফেলে রাখা কিছু নমুনার ঘ্রাণ নিয়ে তাদের খুঁজে বের করা। আর থাকে টিনার মতো নাশকতা রুখতে ওস্তাদ ঘ্রাণবিশারদ ‘স্নিফার ডগে’রা। গত কয়েক মাস ধরে জেলা পুলিশের ‘ট্র্যাকার ডগ’-এর জায়গাটি ফাঁকা। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ হয়ে ‘ট্র্যাকার ডগ’ মিলি গত ১২ ডিসেম্বর মারা যায়। প্রায় দু’বছর ধরে জেলা পুলিশের ‘ডগ স্কোয়াডে’ ছিল মিলি। পুলিশের দাবি, গলসিতে এক পশু চিকিৎসক খুনের ঘটনায় কে অপরাধী, তার সূত্র খুঁজে পাচ্ছিলেন না তদন্তকারী অফিসার। মিলি ঘটনাস্থলে গিয়ে বেশ কিছু নমুনা শুঁকে অপরাধীকে চিহ্নিত করে। ওই ঘটনায় পুলিশ এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল। একই রকম ভাবে রায়না থানার একটি ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরটির দেওয়া ইঙ্গিত ধরে পুলিশ বুঝতে পারে খুন করে এক ব্যক্তিকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরাধীর ফেলে যাওয়া সূত্র ধরে পুলিশ-কুকুরের সাহায্যে তদন্তের কিনারা করেছিল পুলিশ।

এ বার ভোটের আগে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনাতেও পুলিশ কুকুর আনার দাবি উঠবে বলে পুলিশের একাংশের অনুমান। ওই দাবি সামাল দিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে অপরাধীকে খোঁজার জন্য ‘ট্র্যাকার ডগ’ বিশেষ প্রয়োজন বলে তাঁরা মনে করছেন। জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালও বলেন, “খুব শীঘ্রই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আমরা পেয়ে যাব।”

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ব্যারাকপুরে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে একটি ‘ট্র্যাকার ডগে’র সঙ্গে আসতে পারে বিস্ফোরক উদ্ধারে পোক্ত ‘স্নিফার ডগ’। সে ক্ষেত্রে জেলা পুলিশের ‘ডগ স্কোয়াডে’ নাশকতা আটকানোর জন্য ২টি ও অপরাধী খোঁজার জন্য ১টি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর থাকবে। ওই কুকুরদের জেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ২ জন মহিলা-সহ ৬ জন পুলিশ কর্মী ব্যারাকপুরে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। কুকুরগুলিকে স্বাচ্ছন্দ্যে রাখাটা জরুরি বলেও মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। সে কারণে কুকুরদের খাওয়ার উপরেও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ভিআইপি ডিউটিতে গেলে তাদের বোতলবন্দি জল দেওয়া হয়। থাকে টক দই-গ্লুকোজের ঢালাও ব্যবস্থা। এ বার থাকবে এসি গাড়িও।

অপরাধী বা বিস্ফোরক খুঁজতে গিয়ে গরমে কাহিল না হয় টিনারা, সেটাই চাইছেন পুলিশ কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন