প্রতীকী ছবি।
জেলা জুড়ে ধরাশায়ী হয়েছে বিরোধীরা। জয় এসেছে নামমাত্র আসনে। তবে জেলায় তারই মধ্যে বিজেপি যেখানে আশার আলো দেখছে, তা কাঁকসার ফলাফলে। ৪৭টি আসনে লড়াই করে জয় এসেছে ছ’টি আসনে। ‘সন্ত্রাস’ সত্ত্বেও এমন ফল লোকসভা ভোটের আগে দলের কর্মীদের অক্সিজেন জোগাচ্ছে, দাবি বিজেপি নেতাদের।
এ বার কাঁকসা ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মোট ১৩২টি আসনের মধ্যে ৫০টিতে তৃণমূল ছাড়া কোনও দলের প্রার্থী নেই। বাকি ৮২টি আসনে ভোট হয়। কাঁকসায় এর আগে নানা নির্বাচনে সিপিএম ভাল ভোট পেয়ে এসেছে। গত বারও দু’টি পঞ্চায়েত দখলে রেখেছিল সিপিএম। কিন্তু এ বার গোটা ব্লকে পঞ্চায়েত স্তরে মাত্র তিনটি আসনে জিতেছে তারা। সেখানে বিজেপি পেয়েছে ছ’টি আসন। তাই কাঁকসা এখন তারই প্রধান বিরোধী বলে, দাবি বিজেপি-র।
ব্লকে যে ছ’টি আসনে বিজেপি জিতেছে, তার মধ্যে তিনটিই আবার কাঁকসা পঞ্চায়েতে। এই পঞ্চায়েতের ১৪, ১৬ ও ১৭ নম্বর আসনে ১৭৮, ৭৫ ও ১২২ ভোটে জিতেছে তারা। এলাকাগুলিতে অবাঙালি ভোটারের সংখ্যা বেশি। সেখানে আগে সিপিএম ভাল ভোট পেত। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সেই ভোটারদের অনেকেই এ বার বিজেপিকে সমর্থন করেছেন। দলের তরফে নানা কর্মসূচি এই ফল পেতে সাহায্য করেছে বলে মনে করছেন তাঁরা। বিজেপি নেতা রমন শর্মার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল বহিরাগতদের এনে ভোট লুট না করলে আমাদের ফল আরও ভাল হত।’’
বিজেপি-র ফল ভাল হয়েছে গোপালপুর পঞ্চায়েতেও। ২৫ আসনের এই পঞ্চায়েতে ১৭টি আসনে তৃণমূল ছাড়া কোনও দলের প্রার্থী ছিল না। আটটি আসনে ভোট হয়। দু’টিতে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। দলের আসানসোল জেলা সহ-সভাপতি মনোহর কোনার অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েত ভোটে বাইরে থেকে লোকজন এনে ভোট লুট করেছে তৃণমূল। মানুষ যেখানে প্রতিরোধ করতে পেরেছেন, সেখানেই বিজেপি-র ফল ভাল হয়েছে। তবে এই ফল দেখে লোকসভা ভোটের আগে দলের কর্মী-সমর্থকেরা উজ্জীবিত বলে দাবি করেন তিনি।
তবে বিজেপি-র এই ফলাফলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘১৩২টি আসনের মধ্যে ছ’টি আসনে জিতেছে বিজেপি, যা কোনও তুলনাতেই আসে না। ওদের যাঁরা জিতেছেন, তাঁদের অনেকে আবার ইতিমধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’’ গোপালপুরে দলের এক নেতা বিজেপি-কে ইন্ধন জোগানোয় তারা দু’টি আসনে জিতেছে বলেও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। উত্তমবাবু বলেন, ‘‘ওই নেতাকে শো-কজ করা হয়েছে।’’ বিজেপি নেতা মনোহরবাবু অবশ্য দলের জয়ী প্রার্থীদের শাসকদলের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন।