মঙ্গলকোটে বহাল কোন্দলের ‘কাঁটা’

তৃণমূল সূত্রের খবর, এই ‘বাধা’ আসলে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবং মঙ্গলকোটের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর দীর্ঘদিনের কোন্দলেরই ফল।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

এসেছিলেন কয়েক জন। অভিযোগ, বাধা দিলেন অনেকেই। দু’পক্ষই তৃণমূলকর্মী, মঙ্গলকোটের নানা এলাকার। শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এমনই গোলমালের সাক্ষী রইল কাটোয়া। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই ‘বাধা’ আসলে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবং মঙ্গলকোটের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর দীর্ঘদিনের কোন্দলেরই ফল। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের আক্ষেপ, সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু শেষমেশ ভোটের আগেও লাগাম টানা গেল না প্রকাশ্য-কোন্দলে।

Advertisement

এ দিন সকালে পুরসভা মোড়ে মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিলেন দলে মন্ত্রী অনুগামী বলে পরিচিত নিগন, গোহগ্রাম, ঝিলু প্রভৃতি এলাকার সাত প্রার্থী। সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কিছু লোকজন। তাঁদের মধ্যে দেখা গিয়েছে মন্ত্রীর কয়েক জন আত্মীয়কেও। অভিযোগ, তাঁদের জন্য আগেভাগেই ‘পাহারা’ দিচ্ছিলেন মঙ্গলকোটের নানা এলাকার অপূর্ববাবুর অনুগামীরা। ওই দলটিকে দেখেই মারমুখী হয়ে ওঠেন অপূর্ববাবুর অনুগামীরা। কয়েক জনকে লাথি, ঘুসি মারা হয় বলেও অভিযোগ। শেষমেশ ওই সাত জনের কেউই মনোনয়নপত্র জমা না দিতে পেরে ফিরে যান। এ দিন সন্ধ্যায় ঝিলু ২ পঞ্চায়েত সদস্য লিয়াকত শেখের বাড়ি ভাঙচুরও করা হয় বলে অভিযোগ। পালিশ গ্রামের বাসিন্দা লিপিকা সুলতানা বলেন, ‘‘আমাকে তো মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসতেই দেওয়া হয়নি। অপূর্ববাবুর অনুগামীরাই এমন বাধা দিয়েছেন।’’ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

কিন্তু কেন এই গোলমাল? তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের ‘ইতিহাস’ দীর্ঘদিনের। তৃণমূল সূত্রের খবর, ২০১৬-য় বিধানসভা ভোটে সিদ্দিকুল্লাকে প্রার্থী ঘোষণার পরে থেকেই শুরু হয় দু’টি গোষ্ঠীর গোলমাল। এমনকী ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে তেমন সক্রিয়ও হতে দেখা যায়নি অপূর্ববাবুর অনুগামীদের। তার পরে, মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সভা-পাল্টা সভাও করা-সহ নানা ঘটনায় দূরত্ব বেড়েছে দু’গোষ্ঠীর। পরে অচল নোটের মঞ্চে দুই নেতাকে একসঙ্গে আনা-সহ নানা ঘটনায় দু’গোষ্ঠীকে কাছাকাছি আনার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

কিন্তু গোলমাল যে মেটেনি, তা এ দিন ফের স্পষ্ট হল বলেই মনে করছেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। এমনকী অপূর্ববাবুর অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা, কর্মীরাই মঙ্গলকোটের ১৫টি পঞ্চায়েতের ১৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৪৩টি পঞ্চায়েত সমিতি, তিনটি জেলা পরিষদের সব ক’টি আসনেই মনোনয়নপত্র ইতিমধ্যেই জমা দিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলকোটের বিবদমান দুই গোষ্ঠী কে কোথায় প্রার্থী দেবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে তা ফলপ্রসু হয়নি। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের এলাকার কেউ প্রার্থী দেবেন কি না, তা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক চলছে। সেখানে অপূর্ববাবুও রয়েছেন।’’ অপূর্ববাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘দলে কোনও রকম কোন্দল নেই। বাধা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন