West Bengal Panchayat Election

নামের কী জ্বালা, বুঝছেন দুই ‘ভোট’

কেতুগ্রাম ২ ব্লকের নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকুরহাটি গ্রামের চা বিক্রেতা ভোটের জন্মও এর পাঁচ বছর পরে, আর এক বিধানসভা ভোটের দিন।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

দু’জনে: বাঁ দিক থেকে ভোট হেমব্রম ও ভোট ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

অনেকে বলেন, নামে কী আসে যায়! আসলে নামেই যে আসে যায় তা হাড়েহাড়ে বুঝছেন দুই ভোট।

Advertisement

এক জন ভোট হেমব্রম। এ বছরই বিজেপির হয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছেন তিনি। আর এক জন, ভোট ঘোষ রাজনীতি থেকে দূরে চায়ের দোকান চালান। দু’জনেরই দাবি, এমন নাম কেন, ভোটের মরসুমে সে উত্তর দিতে দিতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

বছর সাতচল্লিশের ভোট হেমব্রম চাষবাস করে সংসার চালান। এ বছর বর্ধমান ১ ব্লকের রায়ান ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্টিয়া গ্রামে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাঁর বাড়িতে আছেন স্ত্রী মালতি, মেয়ে মনিকা ও ছেলে শিবু। মনিকা স্থানীয় রাইপুর-কাশিয়াড়া স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। শিবু স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলের ছাত্র। প্রার্থী ভোট জানান, ১৯৭২ সালে বিধানসভার ভোটের দিন জন্মেছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, “সে সময়েও সন্ত্রাসের আবহে ভোট হচ্ছিল। বুথের পথে কেউ যেতে পারছিল না। আমার মা ভোট দিতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল। কিন্তু কয়েকজন এসে জানিয়ে দেয়, ভোট হয়ে গিয়েছে। তারপরেই আমার জন্ম হয়। তখন দায়মা আমার নাম রাখেন ভোট।”

Advertisement

কেতুগ্রাম ২ ব্লকের নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকুরহাটি গ্রামের চা বিক্রেতা ভোটের জন্মও এর পাঁচ বছর পরে, আর এক বিধানসভা ভোটের দিন। তাঁর দাবি, “ভোট দিয়ে আসার পরেই আমার জন্ম হওয়ার জন্য বাবা ভোট নাম রেখেছিল। আমার যে আরেকটি নাম রয়েছে—বলাই, সেটা সবাই বোধ হয় ভুলে গিয়েছে!” কেডিআই স্কুলের সামনে চায়ের দোকানে বসে তিনি বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমার দোকানে বসে সবাই আড্ডা দেয়। আমার বিক্রি বাড়ে। কেডিআই স্কুলে গণনাকেন্দ্র হয়। তখন লোকজনের যাতায়াত বাড়ে। ভোটের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এটুকুই।’’

তাঁর দোকানে চা খেতে খেতে কৌশিক গড়াই, অমরনাথ দাসেরা বলেন, “ভোটকে সারা দিন কতবার যে নাম নিয়ে খরিদ্দাররা জিজ্ঞাসা করে তার ঠিক নেই।” ভোট ঘোষও বলেন, “ভোটের সময় রাস্তাতে বের হলেই শুনতে হয়, ওই তো ভোট এসেছে। বুথে গেলেও কর্মীদের প্রশ্ন, তুমিই ভোট! আগে খারাপ লাগত এখন হেসে চলে আসি।”

ভোট হেমব্রমের সঙ্গে অবশ্য রাজনীতির যোগাযোগ পুরনো। তিনি বলেন, ‘‘আগে অন্য দলকে সমর্থন করতাম। কিন্তু মতের অমিল হওয়ায় সরে আসি। বছর খানেক আগে বিজেপির তরফে তাদের সংগঠনে যোগ দেওয়ার কথা বলা হয়। এ বার প্রার্থীও হয়েছি।’’ তাঁকে প্রচারে গিয়ে শুনতে হচ্ছে ‘ভোটদা কে ভোট দিন’। কচিকাঁচারাও বলছে, ‘ভোট ভোট ভোট এসেছে’। তাঁতবে ভোটের তাতে হেলদোল নেই। তিনি বলেন, “ভোট মানে গণতন্ত্র। সে জন্যই ভোট নেমেছে ভোটের ময়দানে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন