আহারে বাংলায় গেল দুই পান্তুয়া

সীতাভোগ, মিহিদানা, ল্যাংচা ঠাঁই পেয়েছিল আগেই। এ বছরের ‘আহারে বাংলা’ উৎসবে ঠাঁই পেল বর্ধমানের আরও দুই মিষ্টি। ২১ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত কলকাতার মিলনমেলা প্রাঙ্গণে ওই মেলায় কাটোয়ার পরানের পান্তুয়া ও কালনার নোড়া পান্তুয়ারও স্বাদও এ বার পাবেন খাদ্য রসিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১০
Share:

নোড়া পান্তুয়া। নিজস্ব চিত্র।

সীতাভোগ, মিহিদানা, ল্যাংচা ঠাঁই পেয়েছিল আগেই। এ বছরের ‘আহারে বাংলা’ উৎসবে ঠাঁই পেল বর্ধমানের আরও দুই মিষ্টি। ২১ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত কলকাতার মিলনমেলা প্রাঙ্গণে ওই মেলায় কাটোয়ার পরানের পান্তুয়া ও কালনার নোড়া পান্তুয়ারও স্বাদও এ বার পাবেন খাদ্য রসিকেরা।

Advertisement

রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর মেলার আয়োজন করেছে। দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, এই দুই মিষ্টির ভালই কদর রয়েছে জেলায়। তবে প্রচারের অভাব ছিল। এ বার আহারে বাংলার প্ল্যাটফর্ম সে বদনাম ঘোচাবে। কিন্তু পান্তুয়া তো খুবই চেনা মিষ্টি। তাহলে পরানের পান্তুয়া বা নোড়া পান্তুয়ার বিশেষত্ব কী?

জানা যায়, দেশভাগের কিছুটা আগে ও পার বাংলা থেকে কাটোয়ায় এসে বসবাস শুরু করেন সুরেন্দ্রলাল কুণ্ডু। ছেলে প্রাণকৃষ্ণ ওরফে পরানকে নিয়ে ছোট্ট একটি দোকানে কলাইয়ের ডালের অমৃতি এবং মুরুলি ভাজা বিক্রি করে সংসার চালাতে শুরু করেন তিনি। সেই দোকানেই প্রাণকৃষ্ণবাবুর হাতে পরে তৈরি হয় ক্ষীরের পুর দেওয়া পান্তুয়া। নাম হয় ‘পরানের পান্তুয়া’। পরানবাবুর উত্তরসূরীদের দাবি, এই মিষ্টি খেয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে গায়িক সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা শক্তি ঠাকুর, রবি ঘোষেরাও প্রশংসা করে গিয়েছেন। বর্তমানে কাটোয়া শহরের বারোয়ারি তলায় রয়েছে এই মিষ্টির দোকানের দেখাশোনা করেন পরানবাবুর দুই ভাইপো তপন কুণ্ডু এবং সমরেশ কুণ্ডু।

Advertisement

কালনার নোড়া পান্তুয়ার ইতিহাসও বহু পুরনো। ঘিয়ে ছানা ভেজে তৈরি হয় এই পান্তুয়া। শোনা যায়, অতীতে এই মিষ্টির আকার বড় নোড়ার মতো হওয়ায় নাম হয় নোড়া পান্তুয়া। আহারে বাংলার আসরে কালনার নোড়া পান্তুয়ার প্রতিনিধিত্বের জন্য বাছা হয়েছে অম্বিকা সুইটস নামে পুরনো একটি মিষ্টির দোকানকে।

বহু দিন ধরেই কাটোয়া-কালনার মানুষের আক্ষেপ ছিল, সীতাভোগ-ল্যাংচার জেলায় সরকারি ভাবে এই দুই মিষ্টি তেমন গুরুত্ব পায় না। সেই আক্ষেপ মেটাতেই এগিয়ে এসেছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁর নির্দেশেই জেলা শিল্প উন্নয়ন দফতর এই দুই মিষ্টির বিস্তারিত খোঁজ খবর নেয়। ‘আহারে বাংলা’য় যোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয় নিময়কানুনও জানানো হয়। এ দিন সমরেশবাবু বলেন, ‘‘আমরা ১০ এবং ১৫ টাকার পান্তুয়া এনেছি মেলায়। প্রথম দিনই বারোশোর বেশি পান্তুয়া রাখা হয়েছে। আশা করছি ক্রেতাদের মন জয় করতে পারব।’’ কালনার রণজিৎ মোদকেরও বক্তব্য, ‘‘গাওয়া ঘিয়ে ভেজে তৈরি হয়েছে পান্তুয়া। প্রথমদিনই অজস্র ক্রেতার বাহবা মিলেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন