বস্ত্রের সঙ্গে স্কুলে এ বার ‘খাদ্য ব্যাঙ্ক’

২০০৫ সালে তৈরি এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বিনয়কুমার বসু জানান, বিদ্যাসাগরের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে খাদ্য ও বস্ত্র ব্যাঙ্ক গড়া হয়েছে। এই স্কুলে প্রথম থেকেই সমাজের সব স্তরের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২২
Share:

দুর্গাপুরের স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

বস্ত্র ব্যাঙ্ক গড়ে উঠছে বিভিন্ন জায়গায়। এ বার খাদ্য ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ হল দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের ডিআইসিভি পাবলিক হাইস্কুলে। বস্ত্র ব্যাঙ্কের পাশাপাশি খাদ্য ব্যাঙ্ক তৈরি করে পশ্চিম বর্ধমান ও ভিন্‌ জেলার নানা জায়গায় খাবার পাঠানো হচ্ছে বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

২০০৫ সালে তৈরি এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বিনয়কুমার বসু জানান, বিদ্যাসাগরের ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে খাদ্য ও বস্ত্র ব্যাঙ্ক গড়া হয়েছে। এই স্কুলে প্রথম থেকেই সমাজের সব স্তরের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পড়ুয়াদের অনেকে যেমন ফি দিয়ে পড়াশোনা করে, তেমনই অনেকে ন্যূনতম ফি দিয়েও পড়াশোনা করতে পারে। স্কুল থেকেই অনেক পড়ুয়াকে বই, খাতা, ব্যাগ দেওয়া হয়। বিনয়বাবু বলেন, ‘‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের দ্বিশতবর্ষ স্মরণে রেখে খাদ্য ও বস্ত্র ব্যাঙ্ক গড়ার উদ্যোগ হয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্বাস করতেন, দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মনুষ্যত্ব। সেই ভাবাদর্শকে অনুসরণ করেই এই উদ্যোগ।’’

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদ্য ও বস্ত্র ব্যাঙ্ক গড়ার খবর পেয়ে অনেকেই মুড়ি, সুজি, ডালিয়া, বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে হাজির হয়েছেন স্কুলে। পড়ুয়াদের ছোট হয়ে যাওয়া যে সব জামাকাপড় ব্যবহারযোগ্য রয়েছে, সেগুলি স্কুলে আনতে বলা হয়। সেগুলি সাফ করে প্যাকেটে করে তা দুঃস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বস্ত্র ব্যাঙ্ক। কিছু নতুন পোশাক কেনার জন্য স্কুলে সবার কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ করতে হয়েছে স্কুলের তহবিল থেকেও।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়া মারফত খবর পেয়ে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ফুলঝোড়ে ভবঘুরেদের জন্য তৈরি সরকারি আশ্রয়স্থল ‘অভয় আশ্রম’-এর পরিচালকেরা। সেখানকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পোশাক পৌঁছে দিয়ে এসেছে। এ ছাড়া বাঁকুড়ার গৌরীপুরে রয়েছে কুষ্ঠরোগীদের একটি আবাস। সেখানে প্রায় তিনশো জনের জন্য জামাকাপড় সংগ্রহ করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বড়জোড়া ও হাওড়ায় শিশুদের জন্য পরিচালিত দু’টি আবাসে স্কুলের তরফে প্রায় চার হাজার বিস্কুটের প্যাকেট এবং প্রায় তিন হাজার মুড়ির প্যাকেট ও পোশাক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দেবযানী বসু বলেন, ‘‘দুঃস্থদের নিয়ে কাজ করা কোনও সংগঠন যদি স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে সাধ্যমতো খাবার ও পোশাক পাঠানোর উদ্যোগ হবে। আবার কোনও সংগঠন বা ব্যক্তিগত ভাবে কেউ স্কুলের খাদ্য ও বস্ত্র ব্যাঙ্কে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এলে স্বাগত জানানো হবে।’’ এই কর্মসূচি সারা বছর চলবে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন