নির্দিষ্ট সময়ে হোক পুরভোট—এই দাবিতে প্রায় এক মাস ধরে কর্মসূচি নিয়ে চলেছে বামেরা। এ বার আসরে নামল বিজেপি, কংগ্রেস। রবিবার দুর্গাপুরে বিজেপি’র মিছিল থেকে নির্দিষ্ট সময়ে পুরভোট চেয়ে বারবার স্লোগান ওঠে। আজ, মঙ্গলবার দুর্গাপুরে সভা করতে আসার কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর। সেই সভাতেও সময়ে পুরভোটের দাবি উঠবে।
আসানসোলের মতো দুর্গাপুর পুরসভার এলাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। সে জন্য পুরসভার কাছে প্রস্তাব চাওয়া হয়। তৃণমূলের পুরবোর্ড এখনকার ৪৩টি ওয়ার্ডের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব নেয়। বলা হয়, ইছাপুর, আমলাজোড়ার মতো লাগোয়া কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা অন্তর্ভুক্ত করে মোট ৭৫টি ওয়ার্ড করা হোক। সেই প্রস্তাব অবশ্য এখনও কার্যকর হয়নি। মেয়াদ ফুরনো সাত পুরসভায় মে মাসে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। দুর্গাপুরে তৃণমূল পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হবে জুনে। ইতিমধ্যেই বর্তমানের ৪৩টি ওয়ার্ডের আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকাও প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু, ভোটের সময় নিয়ে স্পষ্ট কোনও প্রশাসনিক ইঙ্গিত না মেলায় দুর্গাপুরে সময়ে পুরভোট না হওয়ার সম্ভাবনাই দেখছেন বিরোধীরা। শাসক দলের নেতৃত্বের একাংশও জানিয়েছেন, ওয়ার্ড না বাড়িয়ে নির্বাচন হবে না বলেই ধরে নিয়েছেন তাঁরা।
ঘটনা হল, গত বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরে দু’টি আসনেই হারে তৃণমূল। দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সম্প্রতি পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। বেহাল পুর পরিষেবার অভিযোগ এবং শিল্পের দাবিতে টানা আন্দোলন চালাচ্ছে বামেরা। এই পরিস্থিতিতে ঘর গোছাতে সময় নিতে নির্দিষ্ট সময়ে পুরভোট চাইছে না তৃণমূল, অভিযোগ বিরোধীদের।
সিপিএমের দুর্গাপুর ২ জোনাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষের আগেই নির্বাচন করতে হবে। শাসক দলকে সুবিধা করে দিতে প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত মানা হবে না।’’ কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘সময়ে ভোট চাই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সভা থেকে জোরালো দাবি তুলব।’’ বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘গণতন্ত্র রক্ষায় সময়ে ভোট জরুরি। আমরা টানা আন্দোলন চালাব।’’ তবে তৃণমূল নেতা তথা ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পুরভোট প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের বিষয়। বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই এ সব বলে বাজার গরমের চেষ্টা করছে।’’