প্রতীকী ছবি।
‘ঘরছাড়া’ কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া দেখা দিয়েছে বিজেপিতে। দলের একাংশের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই কয়েকজন ‘ঘরছাড়া’ কর্মী দলের দুই নেতাকে ঘেরাও করে রাখেন। উল্টো সূত্রের আবার দাবি, এক মাস ধরে দলের কর্মী-সমর্থকেরা ঘরছাড়া। স্বাভাবিক ভাবেই নেতাদের দেখে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিজেপির রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্ধমানের ঘটনা খোঁজ নিচ্ছি। সব তথ্য হাতে আসার পরে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বিজেপি সূত্রের দাবি, ওই ঘটনার পরে একটি অংশের নেতারা জেলা কার্যালয়ে আপাতত ‘যাবেন না’ বলে দলকে জানিয়েছেন।
বিজেপি সূত্রে জানা যায়, দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কমিটির তরফে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, জেলা কমিটির সম্পাদক শ্যামলকুমার রায়ের ‘উস্কানি’তেই নেতাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হেনস্থা করা হয় ও প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত ও বিচারের আবেদন করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, বুধবার রাতে অভিযোগের পরেই বৃহস্পতিবার ওই নেতাকে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়। এ দিন সকাল থেকেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব বিভিন্ন জনকে ফোন করে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা করেন। শ্যামলবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘আমি সকালে কলকাতা এসেছি। দলের জেলা দফতরের ঘটনা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। আমার কাছে এ নিয়ে কেউ কিছু জানতে চাননি।’’
বর্ধমান শহরে দলের এই কার্যালয়ে আগেও গোলমাল হয়েছে। ভাঙচুর থেকে গাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য গোলমালের কথা নেতৃত্ব তখন কার্যত মেনে নিয়েছিল। দু’তরফের আট জন দলে ‘শাস্তি’র মুখেও পড়েন। এর পরেই জেলা সভাপতির পদ হারাতে হয় সন্দীপবাবুকে। মহিলা কর্মীদের বিক্ষোভও হয়েছে কার্যালয়ের ভিতরে। বিজেপি সূত্রের দাবি, বুধবার শুধু ‘ঘরছাড়া’ কর্মীদের বিক্ষোভ নয়, অন্য নানা বিধানসভা এলাকার মণ্ডল সভাপতিরা প্রার্থীদের কাছে ভোটে খরচের হিসেব চেয়েও ক্ষোভ জানিয়েছেন। এক প্রার্থী পাওনাদারদের হাতে টাকা দেওয়ার পরে এলাকায় যেতে পেরেছেন বলেও দাবি দলের একটি অংশের।
বারবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠছে কেন? জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি অভিজিৎ তায়ের দাবি, ‘‘পরাজয়ের পরে প্রার্থীদের উপরে কর্মীদের ক্ষোভ হয় সব দলেই। তার উপরে কিছু মানুষের উস্কানি থাকে। সে থেকেই ঘটনা ঘটেছে বলে আমার উপলব্ধি।’’ তিনি অসুস্থ থাকায় দলের কার্যভার সামলাচ্ছেন সহ-সভাপতি প্রবাল রায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব খোঁজ নিয়েছে। ক্ষোভ-বিক্ষোভ কেন হল, তা জানানো হয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথের কটাক্ষ, “যত গোলামাল বিজেপিতেই!’’