নিগনের সভায় তখনও পাশাপাশি বসে অপূর্ব চৌধুরী ও সিদ্দিকুল্লা। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের আগে থেকেই দু’জনের দ্বন্দ্ব চলছিল। বিধানসভা ভোটের পরে একের পর এক মারামারি, বোমাবাজি, আগুন লাগানোর ঘটনায় সেই দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে আসে। এ বার জেলার দুই মন্ত্রীর সামনে তৃণমূলের একাংশ কর্মী-সমর্থক মঙ্গলকোটের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীকে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার কথা বললেন। কর্মীদের কথা শুনে নেমেও যান ব্লক সভাপতি।
সোমবার মঙ্গলকোটের নিগনে স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী দলের সম্প্রীতি সভার আয়োজন করেন। আমন্ত্রণ জানানো হয় অপূর্ববাবুকেও। সেখানেই অপূর্ববাবু মাইক ধরতে গেলে মাঠের মধ্যে থেকে কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে নেমে যাওয়ার কথা বলেন। একটু থাকার পরে জেলার অন্য দুই মন্ত্রীর সঙ্গে বেরিয়ে চলে যান ব্লক সভাপতিও।
সচরাচর এই দুই নেতাকে এক মঞ্চে দেখা যায় না। মঙ্গলকোটের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে অপূর্ববাবু সভা করার মাসখানেক পরে পাল্টা সভা ডাকেন বিধায়ক। তবে কেউই প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে আগে কখনও কথা মুখ খোলেনিনি। কাশেমনগরে গোতিষ্ঠার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি হিসেবে অপূর্ব চৌধুরীর অনুগামী মনোরঞ্জন ঘোষের নাম ঘোষণা হওয়ার পরেও বিধায়ক গোষ্ঠীর লোকজন তা সহজে মেনে নেননি। মাসখানেক আগে মনোরঞ্জনবাবুর বাড়িতে হামলা, বোমাবাজির ঘটনাতেও নাম জড়ায় বিধায়ক অনুগামীদের। তার আগে আবার গোতিষ্ঠায় বিধায়ক গোষ্ঠীর দুখু মল্লিকের বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে ব্লক সভাপতির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও দুই গোষ্ঠীর লোকেদের বোমাবাজি বাড়ি ভাঙচুর, হামলার অভিযোগ লেগেই রয়েছে মঙ্গলকোট জুড়ে।
এ দিন বিধায়কের বক্তব্যের পরে মঞ্চে সভাপতিকে দেখতে পেয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ সভাপতিকে মঞ্চ থেকে নামানোর জন্য শোরগোল শুরু করেন। আধঘন্টার মধ্যে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গে একই গাড়িতে মন্তেশ্বরে নির্বাচনী প্রচারে চলে যান সভাপতি। বিধায়ক বলেন, ‘‘দল ওকে সভাপতি করেছে। চেয়েছিলাম ও কিছু বলুক। ও চলে গেল বলে দুঃখ পেয়েছি।’’ বিধায়ক অনুগামীদের অবশ্য দাবি, সভাপতির লোকজন দিন তিনেক ধরে এই বৈঠকের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছিল। তার জেরেই এ দিনের ঘটনা। অপূর্ববাবু অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
সভায় হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মলয় ঘটক ও কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। মলয়বাবু বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে না চাইলেও স্বপন দেবনাথ পরে দাবি করেন, ‘‘আমরা তো সবাই ওই সভায় ছিলাম। কিছু হয়নি তো!’’