রাস্তা ঘিরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র।
দফায়-দফায় তৃণমূলের অবরোধের জেরে লম্বা যানজট তৈরি হল জাতীয় সড়কে। পুলিশ এক বার অবরোধ তুলে দিলে পরে ফের রাস্তায় বসে পড়েন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বুধবার ঝাড়খণ্ড সীমানায় ডুবুরডিহি চেকপোস্টের কাছে এর জেরে দুর্ভোগ পোহাতে হয় মালবাহী ট্রাক, দূরপাল্লার বাসের যাত্রী থেকে পর্যটকদের।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধের কর্মসূচি মঙ্গলবার রাতেই ঘোষণা করেন তৃণমূল নেতারা। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ডুবুরডিহি চেকপোস্টের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে জড়ো হন তৃণমূল কর্মীরা। ছিলেন দলের নেতা ভি শিবদাসন, উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, বিধান উপাধ্যায়রা। টায়ারে আগুন ধরিয়ে রাস্তায় ফেলে, শতরঞ্চি পেতে কর্মীরা মাঝরাস্তায় বসে গাড়ি চলাচল আটকে দেন।
সকাল থেকে টানা অবরোধ চলতে থাকায় সড়কের সব ক’টি লেনে যানবাহনের লম্বা সারি দাঁড়িয়ে পড়ে। কলকাতা থেকে আসা দূরপাল্লার বাস, পুলকার, পণ্যবোঝাই ট্রাক, ছোট-বড় গাড়ি, ভিন্ রাজ্য থেকে চিকিৎসার জন্য রোগীকে নিয়ে আসা গাড়ি— সবই আটকে পড়ে। বেশ কিছু অ্যাম্বুলেন্সও গাড়ির ভিড়ে থমকে যায়। অনুরোধের পরে সেগুলি বেরোনোর জায়গা পায়।
অবরোধে আটকে পড়েছিল বুদ্ধগয়া থেকে আসা এক দল বিদেশি পর্যটকের বাস। তাঁদের গাইড যোগেশকুমার পাণ্ডে বলেন, ‘‘সন্ধ্যা ৭টায় কলকাতা থেকে বিমান ধরতে হবে। আটকে থাকতে হলে খুব বিপদ পড়ব।’’ অবরোধকারীদের বার কয়েক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধও করেছেন বলে জানান তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি। পড়ুয়া বোঝাই পুলকারও দাঁড়িয়ে ছিল। ঝাড়খণ্ডের মুগমার এক স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সবিতা শর্মা জানায়, বড়দিনের ছুটির পরে এ দিনই স্কুল খুলেছে। কিন্তু পৌঁছতে পারল না তারা। মাইথনের পথে আটকে পড়ে বহু পর্যটকের গাড়ি।
দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তৃণমূল নেতৃত্ব অবরোধ তোলেন। পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। কিন্তু দুপুর ২টো নাগাদ ফের অবরোধ শুরু হয়। চলে বেশ কিছুক্ষণ। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সম্পাদক পাপ্পু উপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নলা লাগোয়া বিহার রোডও অবরোধ করা হয়।
জাতীয় সড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দিনভর অবরোধ করা হল কেন? তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আমাদের এই আন্দোলনে নামতে বাধ্য করেছে। মানুষের অল্প কষ্ট হয়েছে, সে জন্য আমরা দুঃখিত।’’