রক্তদান শিবির, দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
রক্তদান শিবির। তা-ও শুধু মহিলাদের নিয়ে। বুধবার এমনই কর্মসূচি নেয় ‘দুর্গাপুর মহকুমা ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম’। সহযোগিতায় ছিল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে, রক্তদানে মহিলাদের যোগদান বাড়ানোর লক্ষ্যেই তাঁদের এই ধরনের শিবিরের পরিকল্পনা। শিবিরটি হয় ব্লাড ব্যাঙ্কেই।
ফোরামের দাবি, বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ভারতবর্ষে মহিলাদের রক্তদানের হার বেশ কম। মোট রক্তদাতার মাত্র, আট শতাংশ। দুর্গাপুর শহরেও বছরভর রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়। কিন্তু সেই সব শিবিরে মহিলা রক্তদাতার সংখ্যা বেশ কম। সম্প্রতি মহিলাদের মধ্যে রক্তদান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ফোরাম আলোচনাসভা ও সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করে। সেখানে উপস্থিত মহিলারা জানিয়েছেন, তাঁরা অনেকেই রক্তদান করতে চান। কিন্তু পুরুষদের সঙ্গে একই শিবিরে রক্তদান করাটা অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের জন্য অসুবিধার, তা-ও জানান অনেকে। সেই সময়েই শুধু মহিলাদের নিয়ে একটি রক্তদান শিবির আয়োজনের পরিকল্পনা মাথায় আসে উদ্যোক্তাদের।
বুধবার দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে তেমনই একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়। ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক করবী কুণ্ডু বলেন, ‘‘মহিলা রক্তদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি করতেই ‘মা ও মেয়েদের রক্তদান শিবিরে’র আয়োজন করা হয় এ দিন। মোট ২৬জন রক্তদান করেন।’’ ফোরাম সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্তদাতার দলে অনূর্ধ্ব ৩০-এর পাশাপাশি পঞ্চাশোর্ধ্বরাও ছিলেন। সবচেয়ে কমবয়সী রক্তদাতা, মুচিপাড়া আমবাগানের বাসিন্দা ১৯ বছরের হাজেরা খাতুন। রক্ত দিয়েছেন ৫৯ বছরের অমিতা জৈনও।
শিবিরে উপস্থিত ছিলেন ‘ফেডারেশন অফ ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অর্গানাইজেশন’-এর পক্ষে দেবাশিস চক্রবর্তী, রাজেশ পালিত, মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে স্বস্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনজীবী আয়ুব আনসারি, ব্লাড ডোনার্স ফোরামের যুগ্ম সম্পাদিকা সুলতা দাস প্রমুখ। ফোরাম সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে গড়ে ফি দিন ৩০-৪০ ইউনিট রক্তের দরকার হয়। কখনও কখনও প্রয়োজন আরও বাড়ে। ফোরামের সম্পাদক কবিবাবু বলেন, ‘‘মহিলারা রক্তদানে এগিয়ে এলে সার্বিক ভাবে রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ বাড়বে। আরও রোগীর উপকার হবে। মহিলাদের মধ্যে রক্তদান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতেই এমন শিবিরের পরিকল্পনা করা হয়।’’