নিষ্ক্রিয় করা হল বোমা। রায়নায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
পরিত্যক্ত বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় আড়াইশো বোমা উদ্ধার করল পুলিশ। রবিবার ভোরে রায়নার বেলসর গ্রামে জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে বোমাগুলি ছাড়াও দু’টি মাস্কেট ও দু’টি হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। বোমাগুলি ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে বর্ধমান-শ্যামসুন্দর রোডে একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, “এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আমরা তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।” তবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ রয়েছে কি না, সে নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। পুলিশ সুপার বলেন, “পুরো ঘটনা খতিয়ে না দেখে কিছু বলা সম্ভব নয়।” যে তিন ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে তাদের মধ্যে দু’জন বেলসর ও এক জন জ্যোত্সাদি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার।
২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে হিজলনা পঞ্চায়েতের এই গ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষের বহু ঘটনা ঘটেছে। এই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান সিপিএমের বামদেব মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠে। সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে সেই সময়ে প্রায়শই গোলমাল বাধত। বহু মানুষ গ্রাম ছাড়া হয়েছিলেন সেই সময়ে। সেই বেলসর গ্রামে ফের বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
হিজলনা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের শেখ মহম্মদ হোসেন এ দিন দাবি করেন, “সিপিএম ছেড়ে আসা শেখ মানিক দলের পুরনো লোকজনকে জুটিয়ে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করছে। তারাই এলাকায় বেআইনি অস্ত্রের কারবার চালাচ্ছে। আমরা পুলিশের কাছে এই বেআইনি অস্ত্রের ভাণ্ডার খুঁজে বের করতে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ কার্যত কিছু করেনি। নতুন পুলিশ সুপার উদ্যোগী হলে আরও অনেক অস্ত্রশস্ত্রের খোঁজ মিলতে পারে।” সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি উদয় সরকারের পাল্টা অভিযোগ, “ওখানে আমাদের লোকেরা নানা মিথ্যে মামলায় জর্জরিত ও সন্ত্রাসের শিকার। তাদের পক্ষে বোমা বা আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা সম্ভব নয়। যা খবর পেয়েছি, বালিখাদের দখল নিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দু’টি দুষ্কৃতী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালের জন্যই ওই বোমা মজুত করা হচ্ছিল।”