কুয়াশায় বিপাকে উড়ান, বিঘ্নিত ট্রেন

অণ্ডাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখান থেকে এই প্রথম কোনও বিমানকে অন্য বিমানবন্দরে ফিরিয়ে দিতে হল। ওই উড়ানের পাইলট এটিসি-কে জানান, অবতরণের জন্য ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতা দরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share:

বাঁ দিকে, সকাল ৭টা নাগাদ দুর্গাপুরের বাঁকুড়া মোড় এলাকায়। ছবি: বিকাশ মশান

কুয়াশায় ঢাকা খনি-শিল্পাঞ্চলে বিঘ্নিত হল ট্রেন থেকে বিমান, নানা পরিষেবাই। রবিবার দিনভর কার্যত দেখা গেল না সূর্যের মুখ। সকালে কাজকর্মে যেতে সমস্যায় পড়লেন মানুষজন। দৃশ্যমানতার অভাবে বাস চলাচলেও দেরি হয়েছে।

Advertisement

শনিবার রাত ৯টা নাগাদ হালকা কুয়াশায় ঢেকে যায় এলাকা। রাতে কুয়াশা আরও ঘন হয়। রাস্তার আলোগুলিও ঝাপসা হয়ে যায়। হায়দরাবাদ থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান অণ্ডালে নামার নির্ধারিত সময় রাত সওয়া ১টা। শনিবার সেটি হায়দরাবাদ থেকে বেশ কিছুটা দেরিতে ছাড়ে। অণ্ডালের আকাশে সেটি পৌঁছয় রাত ২টো নাগাদ। তখন ঘন কুয়াশায় চার দিক ঢেকে গিয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, এর পরে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা উড়ানটি অণ্ডালের আকাশে চক্কর কাটে। কিন্তু দৃশ্যমানতা কম থাকায় সেটি নামতে না পারায়, শেষে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

অণ্ডাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখান থেকে এই প্রথম কোনও বিমানকে অন্য বিমানবন্দরে ফিরিয়ে দিতে হল। ওই উড়ানের পাইলট এটিসি-কে জানান, অবতরণের জন্য ৫৫০ মিটার দৃশ্যমানতা দরকার। কিন্তু তখন সর্বোচ্চ দৃশ্যমানতা ছিল ৪০০ মিটার। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় এবং বিমানের জ্বালানি কমে যাওয়ায় আর ঝুঁকি নেননি পাইলট। বিমানটিকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিমানবন্দরের ডিরেক্টর অপূর্ব শর্মা বলেন, ‘‘যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’ ওই বিমান রাত ২টো ১০ নাগাদ ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল হায়দরাবাদের উদ্দেশে। সে রাতে সেটি বাতিল হয়ে যায়।

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় নামা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। হায়দরাবাদের যাত্রীদের অণ্ডাল থেকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে অন্য বিমান ধরার ব্যবস্থা করা হয়। কেউ-কেউ টিকিট বাতিল করায় টাকা ফেরতের ব্যবস্থা হয়েছে। যাঁরা অণ্ডাল থেকেই বিমান ধরতে চান তাঁদের পরের দিনের বিমানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়।

কুয়াশার জন্য এ দিন সকালের শিফ্‌টে কাজে যেতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন কারখানার কর্মীরা। তাঁরা জানান, সামান্য দূরের জিনিসও দেখা যাচ্ছিল না। ঝুঁকি নিয়ে জাতীয় সড়ক পারাপার করতে হয়েছে অনেককে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, কুয়াশার কারণে ট্রেন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে। ডাউন মিথিলা এক্সপ্রেস, ডাউন অমৃতসর এক্সপ্রেস-সহ বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন দেরিতে চলেছে বলে আসানসোল ডিভিশন সূত্রে জানা যায়।

সকালে সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে যাত্রীদের অনেকে গন্তব্যে যাওয়ার বাস পাননি বলে অভিযোগ। বাসের চালকেরা জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে ধীরে বাস চালাতে হয়েছে। তাই কিছুটা দেরি হয়েছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বাজার-দোকানেও বিশেষ ভিড় ছিল না। তার পরে সামান্য রোদ দেখা দেওয়ায় লোকজন বাড়ি থেকে বেরোতে শুরু করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন